ইতিহাস জানলে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে: প্রধানমন্ত্রী

  গ্রামনগর বার্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২২, ১৯:১৬ |  আপডেট  : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৫২

দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে ত্যাগের ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতিহাস জানার মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্ম এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মের ভেতর একটা চেতনা জাগ্রত হবে, দেশপ্রেমে তারা উদ্বুদ্ধ হবে এবং মানুষের কল্যাণে তারা আরও কাজ করতে অনুপ্রেরণা পাবে। ’‘নতুন প্রজন্মের এই মানসিকতা যত বেশি ফিরে আসবে, তত আমার দেশ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সংস্কৃতিকভাবে এগিয়ে যাবে। ’

রোববার ২৭ মার্চ সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে  থাকা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের  কার্যালয়ে স্থাপিত ‘মুজিব কর্নার’ উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। এই ধারাবাহিকতাটা বজায় রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কেননা ২১ বছর (৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ৯৬ সাল)  আমাদের বিজয়গাঁথা মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল, নতুন প্রজন্মের অনেকে সে ইতিহাস জানতেই পারেনি। আজকে তা আবার ফিরে এসেছে। ’

একটানা আওয়ামী লীগ সরকারে থাকার সুফলের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘদিন সরকারে থাকার ফলে বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং সমগ্র বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে মর্যাদার চোখে দেখে। ’

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘’৭৫ এর পর ইতিহাস থেকে জাতির পিতার নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল, জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সামান্য কয়েকটা বাছা বাছা গান বাজানো হতো, যে গানগুলো মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল, সেগুলো নিষিদ্ধ ছিল। কোথাও এতটুকু জায়গায়ও যদি বঙ্গবন্ধুর একটা ছবি থাকতো… সেটাকে ঢেকে রাখা হতো। ’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস বলতে গেলে সব জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ছবি চলে আসে। সেগুলো সবসময়... যেন দেখা না যায়, মানুষ যেন জানতে না পারে—একটা বিকৃত ইতিহাস সৃষ্টি করার চেষ্টা এবং মূল ইতিহাসটাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। …যারা সত্যকে মুছে ফেলার চেষ্টা করে, মুছে ফেলা যায় না—আজকে সেটাই প্রমাণ হয়েছে। ’

বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর বিদেশে রিফিউজি হিসেবে থাকার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রবাসে ছিলাম, রিফিউজি হিসেবে। নিজের নাম-পরিচয় দিতে পারিনি। নিরাপত্তার স্বার্থে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এই শোক, কষ্ট, ব্যথা সহ্য করা খুবই কঠিন। তারপরেও আমাদের জীবনের একটা প্রতিজ্ঞা ছিল জীবনে একদিন না একদিন সময় আসবে। কারণ এত আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যেতে পারে না। ’

এত রক্তপাত, এত ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা যেন বৃথা না যায় সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসএসএফ কার্যালয়ে স্থাপিত মুজিব কর্নার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই যে কর্নারটা করা হয়েছে, সেখানে ইতিহাসের অনেক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কাজেই যারা দায়িত্ব পালন করতে আসবেন, তারা একদিকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবেন আর বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলার প্রেরণা পাবেন। ’

দেশি ও বিদেশি ভিভিআইপি ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এসএসএফ সদস্যদের পেশাদারত্ব ও দক্ষতার প্রশংসা করেন সরকারপ্রধান। এসএসএফ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্য এবং দেশবাসীর জন্য দোয়া করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কবীর আহাম্মদ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত