ইউক্রেনে বাংলাদেশি নাবিকরা ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে বাঁচার আকুতি

  গ্রামনগর বার্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩ মার্চ ২০২২, ১২:৫৩ |  আপডেট  : ৮ মে ২০২৪, ২১:৪৯

রুশ বাহিনীর রকেট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে নোঙর করে রাখা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ থেকে ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে উদ্ধারের আকুতি জানিয়েছেন নাবিকরা। ওই হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফ নিহত হয়েছেন। ওই জাহাজে অবস্থান করা নাবিকদের পাঠানো দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে একজন নাবিক বলেন, ‘আমি বাংলার সমৃদ্ধির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার। আমাদের জাহাজে একটু আগে রকেট হামলা হয়েছে। একজন অলরেডি ডেড। আমাদের পাওয়ার সাপ্লাই নেই। ইমার্জেন্সি জেনারেটরে পাওয়ার সাপ্লাই চলছে। আমরা মৃত্যুর মুখে সম্মুখীন।

আমাদের এখনো উদ্ধার করা হয়নি। দয়া করে আপনারা আমাদের বাঁচান। আমরা সবাই আছি এখানে। দেখেন।...আমাদের কোনো জায়গা থেকে সাহায্য আসেনি। আমাদের বাঁচান।’

৩১ সেকেন্ডের অপর একটি ভিডিওতে জাহাজটির আরেকজন নাবিক বলেন, ‘আমি আসিফুল ইসলাম আসিফ।...আমরা নাকি পোল্যান্ডে চলে গেছি নিরাপদভাবে। এটা ভুল নিউজ। আমাদের প্লিজ এখান থেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন।’

ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে নোঙর করে রাখা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে) গোলা আঘাত হানে। এতে এক বাংলাদেশি নাবিক নিহত হন। ওই নাবিকের নাম হাদিসুর রহমান। তিনি জাহাজটিতে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামে।

এমভি বাংলার সমৃদ্ধি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজ। শিপিং করপোরেশন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি সংস্থা। এ সংস্থার সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছানোর পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানে রয়েছে। ওই দিন ভোরেই ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। জাহাজটিতে বাংলাদেশের ২৯ নাবিক ছিলেন। একজন মারা যাওয়ায় এখন সেখানে ২৮ নাবিক রয়েছেন।

এদিকে হামলায় নিহত নাবিকের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা। বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা বাজারসংলগ্ন চেয়ারম্যান বাড়ির বাসিন্দা মো. আবদুর রাজ্জাক (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক) ও আমেনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে হাদিসুর।  

তিন ভাই এক বোনের মধ্যে বোন সবার বড়। এরপর হাদিসুর রহমান। তার ছোট দুই ভাই লেখাপড়া করেন বরগুনায়। হাদিসুর রহমানই শুধু উপর্জন করতেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা। ছেলের লাশ দেশে আনার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন তারা।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত