আসলে মোবাইল চুরি-ই হয়নি, প্রতিবন্ধি যুবককে নির্যাতনের সাজা ২০ হাজার টাকা
প্রকাশ: ২২ মে ২০২১, ১৯:২০ | আপডেট : ৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩২
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার এক প্রত্যন্ত পল্লীতে মোবাইল চুরির অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়েছে। সুরুজ (৩৫) নামের এক মানষিক ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধি যুবককে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া ও নির্মম ভাবে নির্যাতন করা অপরাধী শরেফুলের সাজা ধার্য করা হয়েছে মাত্র ২০ হাজার টাকা। শনিবার গ্রামে বসানো শালিসে মোবাইল মালিক শরেফুলের অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হয়। ফলে ওই রায় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফৌজদারী আইনের ঘটনা নিয়ে শালিস করা যায় কি-না সেটা সাধারণ জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ঈদুল ফিতরের পরদিন উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী কাশিমিলা গ্রামের মোড়ে অবস্থিত শরেফুলের মার্কেটের মালিক শরেফুল তার দোকান থেকে একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়ে গেছে বলে দাবী। পরে ওই মোবাইল চুরির অভিযোগে ওই দিন রাতে তিনি একই গ্রামের মানষিক ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধি যুবক সুরুজকে ধরে বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তার হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে সাপ পেটানোর মত নির্মম ভাবে পিটিয়ে আহত করে। এবিষয়ে শুক্রবার জাতীয় সহ স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হলে টনক নড়ে। এনিয়ে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে ওই গ্রামের স্কুল মাঠে শালিস বৈঠক বসানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন গ্রামের বাসিন্দা সাবেক শিক্ষক আজিজার রহমান। সেখানে স্বাক্ষ্য প্রমানে অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হয় এবং আরো প্রমানিত হয় যে মোবাইলটি চুরি-ই হয়নি। তিনি এই প্রতিনিধিকে জানান, বিষয়টি নিয়ে আইনগত জটিলতা থাকায় আমরা কোন শালিস বা দরবার করিনি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সমাজের নেতৃস্থানীয় মানুষজন বসেছিলাম। সেখানে মানসিক প্রতিবন্ধি সুরুজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হয়। একারণে এবং অন্যায় ভাবে নির্যাতন করায় চিকিৎসা খরচ হিসাবে শরেফুলের নিকট থেকে ওই টাকা নিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি জানান, সান্তাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু এবং গ্রামের মুরব্বীগণ সম্মিলিত ভাবে ওই রায় প্রদান করেন। এছাড়া শরেফুল হাতজোর ক্ষামা প্রার্থনা করায় সুরজের হতদরীদ্র পরিবার তা মেনে নেয়। এবিষয়ে আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্য জালাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত