আফগানিস্তানের প্রথম কোনো প্রাদেশিক রাজধানী পতনের মুখে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩ আগস্ট ২০২১, ১০:২৬ |  আপডেট  : ২৭ মার্চ ২০২৪, ২১:২৮

আফগানিস্তানে ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হয়েছে সরকারি বাহিনী ও তালেবান যোদ্ধাদের মধ্যে। বর্তমানে দেশটির তিন গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে চলছে দুইপক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই। রণাঙ্গণে পরিণত হয়েছে রাজপথগুলো।

দেশটির হেলমান্দ প্রদেশের লস্কর গাহে যেকোনও সময় নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঝুঁকিতে সরকার। শহরটিতে সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত চলে মার্কিন বিমান হামলা। এরপরও পিছু হটেনি যোদ্ধারা। এছাড়া সোমবার একটি টিভি স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবানরা।

ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমবারের মতো দেশটির কোনও প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নিতে যাচ্ছে তালেবানরা। খবর বিবিসির।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন ও আফগান বাহিনীর বিমান হামলা সত্ত্বেও দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের লস্কর গাহ শহরটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর তুমুল আক্রমণের মধ্যে রয়েছে। তালেবানেরা একটি টিভি স্টেশন দখলে নিয়েছে। গ্রাম থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নিয়েছে।

হাসপাতাল থেকে এক চিকিৎসক বিবিসিকে জানান, চারদিকে লড়াই চলছে। তালেবান বাহিনীর মোকাবিলা শত শত আফগান সেনা ময়দানে রয়েছে। তবে তারা সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে নেই।

আমেরিকানদের ২০ বছরের যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগের সময়ে গত কয়েক মাসে তালেবানরা দ্রুত দেশের অনেকটা অঞ্চল দখলে নিয়েছে। আগস্টের মধ্যেই সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করবে আমেরিকা।

মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনাদের অভিযানের কেন্দ্রস্থল ছিল হেলমান্দ। সেখানে তালেবানদের বিজয় আফগান সরকারের জন্য বড় একটি ধাক্কা।

যদি লস্কর গাহ’র পতন ঘটে, তবে এটি হতে যাচ্ছে ২০১৬ সালের পর প্রথম কোনও প্রাদেশিক রাজধানীর পতন। বর্তমানে দেশটির তিনটি প্রাদেশিক রাজধানী ঘিরে যুদ্ধ চলছে।

এক আগফান সেনা কমান্ডার সতর্ক করে বলেছেন, শহরটি তালেবানদের দখলে গেলে বৈশ্বিক নিরাপত্তায় বিধ্বংসী প্রভাব ফেলবে।

মেজর জেনারেল সামি সাদাত বলেন, এটা শুধু আফগানিস্তানের যুদ্ধ হয়। এটি স্বাধীনতা ও সর্বগ্রাসিতার মধ্যে লড়াই।

সোমবার আফগান তথ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তালেবান আক্রমণ ও হুমকির মুখে হেলমান্দের ১১টি রেডিও ও চারটি টিভি নেটওয়ার্ক সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে।

এদিকে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার দখলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান বাহিনী। রবিবার সেখানকার বিমানবন্দরে রকেট হামলা চালানো হয়। কান্দাহারের পতন ঘটলে তাদের প্রতীকী বিজয় হবে, এর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চল তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।

এছাড়া দিনের পর দিন লড়াইয়ে অবরুদ্ধ হয়ে আছে তৃতীয় বৃহত্তম শহর হেরাত।

সম্প্রতি তালেবানেরা জানায়, তাদের যোদ্ধারা ইতিমধ্যে আফগান ভূখণ্ডের ৮৫ ভাগ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। সরকারিভাবে এ দাবির বিরোধিতা করা হলেও অন্য কিছু সূত্র বলছে, দেশটির ৪০০টির জেলার অর্ধেকের মতো দখল করে নিয়েছে তালিবানেরা। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলগুলো দখল করে রাজধানীকে ঘিরে ফেলা তাদের লক্ষ্য।

সম্প্রতি দখল নেয় ইরান, তুর্কমিনিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিং।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত