আদমদীঘি রহিম উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ অধ্যক্ষ ও আইপিজে উবির প্রধান শিক্ষক ৫৪ দিন ধরে উধাও

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:৩৯ |  আপডেট  : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:৩১

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরের আদমদীঘি রহিম উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান ও আদমদীঘি ঈশ্বর পূর্ন জয় পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনজু আরা বেগম ৫৪ দিন ধরে উধাও। এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ছুটি ছাড়াই গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত। অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রধান শিক্ষক মনজু আরা বেগম উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাদের দীর্ঘ দিন অনুপস্থিতির কারণে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান সহ দাপ্তরিক নানা কার্যক্রম। তবে এখনও পর্যন্ত এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান অনুপস্থিতির ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পক্ষ থেকে কোন কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়নি। এদিকে ছুটি ছাড়াই ৫৪দিন অনুপস্থিত, তবুও বেতন পাচ্ছেন দাবী-অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের। কিন্তু এমন পরিস্থিথির মধ্যেও তাঁরা স্বপদে বহাল কেন? প্রশ্ন সাধারন মানুষের মুখে মুখে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা সদরেই অবস্থিত আদমদীঘি রহিম উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ এবং আদমদীঘি ঈশ্বর পূর্ণ জয় পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনজু আরা বেগম। সরকার পতনের পর থেকে তাঁরা দুজনই অনুপস্থিত। চাকরি বাঁচাতে চিকিৎসা ছুটির জন্য লিখিত আবেদন দিয়েছিলেন কিন্তু তা মঞ্জুর হয়নি। ফলে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। প্রধান শিক্ষক মনজু আরা বেগম আদমদীঘি উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বগুড়া জেলা পরিষদের সদস্য। স্বামী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খাঁন রাজু আর ছেলে সাবেক এমপি খাঁন মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ্ আল মেহেদী বাঁধন। শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর পরই স্ব-পরিবারে পালিয়ে যান। তারপর থেকেই তিনি বিদ্যালয়ে যান নি। চিকিৎসার জন্য ছুটি চেয়ে ইউএনও বরাবর দেওয়া তাঁর একটি লিখিত আবেদন গত ১৮ আগস্ট গ্রহণ করা হয়। কিন্তু সেই ছুটি মঞ্জুর হয়নি। তবুও তিনি ৫৪দিন ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। মনজু আরা বেগমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 

অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক। সরকার পতনের পর থেকেই তিনি কলেজে অনুপস্থিত। তিনিও চিকিৎসা ছুটি চেয়ে আবেদন দেন। কিন্তু পাননি, এরপরও রয়েছেন স্ব-পদে বহাল। পেয়েছেন গত মাসের বেতন। এদিকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি অবৈধভাবে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগ এনে গত ১২ আগস্ট বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কে উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও সচেতন মহলের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। এরপর তার অপকর্মের দশটি অভিযোগ তুলে ধরে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে একটি লিখিত আবেদন দেওয়া হয়। তাঁরা তার স্থায়ী বহিস্কার চেয়েছেন। এরই মধ্যে ৫৪দিন কলেজে অনুপস্থিত থেকেও স্বপদে বহাল তিনি। 

এবিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান বলেন, ছুটির চেয়ে দুই মাসের জন্য দু’দফায় আবেদন দিয়েছিলাম। মঞ্জুর হয়েছে কিনা তা জানানো হয়নি। তবে আগস্টের বেতন পেয়েছি। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুমানা আফরোজ জানান, তাঁরা ছুটির জন্য আবেদন করলেও তা মঞ্জুর হয়নি। তাঁরা অনুপস্থিত থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিধি অনুযায়ী অইনগতভাবে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শিক্ষককে দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক যে নির্দেশনা আসবে সেই মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, বেতন তুলতে হলে বেতন বিলে স্বাক্ষর করতে হয়। কিন্তু তাঁরা তো অনুপস্থিত।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত