আদমদীঘির হাজার হাজার মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে

  মোঃ হেদায়েতুল ইসলাম (উজ্জল)

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০৯ |  আপডেট  : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১১

জিরার মূল্য বৃদ্ধির সুযোগে কিছু অসৎ ব্যবসায়ীরা জিরার মধ্যে নানা রকম ভেজাল বীজ মেশাল দিচ্ছে। এতে করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। জিরা নয় কিন্তু জিরার মতই দেখতে এইসব বীজ খাবার ফলে মানুষের পাকস্থলি, ক্ষুদ্রান্ত-বৃহদান্ত সহ পরিপাকতন্ত্রের জটিল ও দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। কোন ওষুধেই এ থেকে নিস্তার মিলছে না। দীর্ঘস্থায়ী পেটের পীড়া থেকে ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস এর মত দুরারোগ্য ব্যাধি হওয়ার আশংকা রয়েছে। উপজেলা সদরের বিভিন্ন হাট বাজার, সান্তাহার, ছাতিয়ানগ্রাম, নশরতপুর, চাঁপাপুর ও কুন্দগ্রাম বাজার সহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে এখন ভেজাল জিরায় সয়লাব। বগুড়া সহ আশ পাশ জেলা ও উপজেলার বাজার গুলোতে আধিপত্য করছে ভারতীয় জিরা। এসব জিরার মধ্যে অতি কম দামে অবিকল জিরার মতই একশ্রেণির বীজ মিশিয়ে জিরা বলে বিক্রি করছে একদল অসৎ ব্যবসায়ী। বেশি লাভের আশায় তারা এসব করছে। জিরার কেজি আড়াই’শ টাকা হলেও মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ৬শ টাকায় উঠেছে। এই সুযোগে এসব ভারতীয় ভেজাল জিরা বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। খাবারের সময় একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায় খাবারটি আসল জিরা নাকি নকল জিরাই রান্না হয়েছে। ভেজাল এবং বিষাক্ত এসব জিরা দাঁতের নিচে পড়লে দূর্গন্ধ পাওয়া যায়, মুখ বিস্বাদ হয়ে উঠে। খাবারের স্বাদ নষ্ট করে এসব জিরা। জিরা মুখে দিয়ে চিবিয়ে কেনার জন্য অনুরোধ করেছেন মসলা ব্যবসায়ীরা। খারাপ, ভেজাল ও বিষাক্ত এসব মসলা ক্রয় থেকে বিরত থাকতে বলেছে চিকিৎসক ও পুষ্টি বিজ্ঞানীগণ। এই ঈদ মওসুমে হাজার হাজার টাকার ভেজাল মসলার ব্যবসা করছে অসৎ ব্যবসায়ীরা। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা এদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকার সচেতন নাগরিকগণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিজ্ঞানীর অধ্যাপক ড. আক্তারুজ্জামান মতে, প্রচলিত মসলার সাথে ভেজাল কিছু মেশালে পরিপাক ক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন খাবার পাকস্থলিতে গিয়ে শরীর সহজে গ্রহণ করতে পারে না। এতে পরিপাকতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী ত্রুটি ও অসুস্থ্যতা দেখা দেয়। মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে। নানা রকম হরমনের গন্ডগোল তৈরি হয়। নানা রকম অসংক্রামক ব্যাধিতে ভুগতে থাকে মানুষ। শিশু প্রসূতিদের জন্য এটা আরো মারাত্বক আকার ধারণ করে। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি বিভাগের অধ্যাপক শামীম আহম্মেদ চৌধুরীর মতে, সবধরণের ভেজাল খাবার মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির উন্নতম কারণ। মসলায় ভেজাল সবচেয়ে বেশি মারাত্মক। এতে যেমন মানুষ নিরবে কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়। এসব অধিকাংশই দূরারোগ্য ব্যাধি। ভেজাল মসলা এজন্যই এরিয়া চলা দরকার। ভেজাল মসলা খাওয়ার চেয়ে মসলা ছাড়া খাবার খাওয়াই ভাল। আদমদীঘি দৈনিক বাজারের বেশকিছু মুদি দোকানি ও মসলা ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার প্রতিটি হাট ও বাজারে এসব ভারতীয় ভেজাল জিরায় সয়লাব। তবে ভাল ব্যবসায়ীরা জিরা মুখে দিয়ে চিবিয়ে কেনার জন্য অনুরোধ জানান।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত