আদমদীঘিতে দিন দিন বাদাম চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৮ জুন ২০২৪, ১৮:১৩ |  আপডেট  : ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৪

উত্তর জনপদের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বাদাম চাষে কৃষকদের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। বাদাম চাষের অনুকুল আবহাওয়া থাকায় এবছর বাদামের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভবনা। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় এ অঞ্চলে বাদাম চাষ বাড়ছে। এদিকে বাদামের দাম ভালো পাওয়ায় বাদাম চাষে ঝুঁকছে চাষিরা। আদমদীঘি উপজেলা কৃষি বিভাগের সূত্র মতে, উঁচু ও নদীর চর এলাকায় বাদামের ফলন ভালো হয়। অন্যান্য ফসলের তুলনায় বাদাম চাষে তেমন শ্রম দিতে হয় না। বাদামে রোগবালাই কম থাকায় কীটনাশক প্রয়োগের ঝামেলাও কম। ফলন ভালো পেতে মাঝে মধ্যে কয়েকবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। বাজারে বাদামের ভালো দাম থাকায় গত কয়েক বছর ধরে বাদাম চাষে ঝুঁকছেন এখানকার চাষিরা। জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বেশকিছু কৃষকরা তাদের জমিতে বাদাম চাষ করেছে। তবে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নে বালি মাটি থাকায় অন্যান্য ইউনিয়নের তুলনায় এ ইউনিয়নে বাদাম চাষ ভালো হয়েছে। প্রতি বছরে বাদামের দাম ও ফলন ভালো পাওয়ায় এলাকার চাষিরা ধান চাষের পাশাপাশি বাদাম চাষের দিকে মনোযোগী হচ্ছে। ভরা মৌসুমে প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ হানা দিলে ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হয়। তবে বাদামের খুব একটা ক্ষতি হয় না। প্রতি হেক্টর জমিতে দুই টনের অধিক বাদামের ফলন হয়। রোপা-আমন ধান কাটার পরেই সুযোগ বুঝে চাষিরা আন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বাদাম চাশ শুরু করেন। উপজেলার কেশরতা গ্রামের আব্দুর রহিম জানান, আমি এবার ১৫ শতক জমি বর্গা নিয়ে বাদাম চাষ করেছি। এসব জমিতে আগে ধান আবাদ হতো। এখন ধানের পাশাপাশি বাদাম চাষ করছি। জমিতে যে পরিমাণ বাদাম গাছ দেখা যাচ্ছে তাতে বুঝা যাচ্ছে বেশ ভাল ফলন পাওয়া যাবে। কৃষক আব্দুর রহিম আরও বলেন, এ উপজেলায় বাদাম চাষ বাড়ছে, সরকারি ভাবে চাষিদের উচ্চ ফলনশীল বাদামের বীজ, রাসায়নিক সার, ও অন্যান্য উপকরণ সঠিক সময়ে সরবরাহ করা হলে ধানের মতো বাদাম চাষের উজ্জল সম্ভবনা দেখা দিবে। একই গ্রামের কৃষক জামরুল, ময়েন উদ্দিন বলেন, কয়েক বছর থেকে তারা বাদাম চাষ করে আসছে এবং ফলনও বেশ ভাল পেয়েছে। অল্প খরচ কম পরিশ্রমে এটি একটি ভাল ফসল। তাদের লাভ দেখে অন্যান্য কৃষকরাও বাদাম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, অল্প খরচ ও কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার উপজেলায় বাদাম চাষ বেশি হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বাদামের ভালো ফলন হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফল গবেষণা ইন্সটিটিউট রাজশাহী কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (অবঃ) ড. আলিম উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, বাদাম একটি পুষ্টিগুন সম্মলিত ফসল। মাঠ পর্যায়ে প্রান্তিক চাষিদের বাদাম চাষের আগ্রহ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আগামীতে চাষিদের জন্য উচ্চ ফলনশীল জাতের বাদামের বীজ সরবরাহ এবং এলাকার কৃষকদের উৎসাহিত করা হবে বলে জানান।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত