আগে কথা শোনেনি, এখন পা ধরে বেড়াচ্ছে, ভ্যাকসিনের ট্রায়াল প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২১, ১৫:৩৬ |  আপডেট  : ১৩ মে ২০২৪, ১৩:৩১

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বছরখানেক আগেই চীনের করোনা ভ্যাকসিন বাংলাদেশে ট্রায়ালের অনুমোদন দিতে বলেছিলাম। কিন্তু ওইসময় তারা সেটা শোনেনি। এখন চীনের পা ধরে বেড়াচ্ছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ করোনা চিকিৎসা সেবার উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমি যখন বলেছিলাম, চীনকে ট্রায়াল করতে দাও কথা শুনে না;  এখন তো পা ধরে বেড়াচ্ছে সরকার। এর পায়ে একবার ধরে ওর পায়ে একবার ধরে। তারা যখন আসছিল তখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখানে সরকারের ইচ্ছার বড় অভাব আছে। তাছাড়া সরকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এমন কিছু ব্যক্তিকে বসিয়েছে তারা কখন কী বলে তার কোনো ঠিক থাকে না।

দেশে এখন পর্যন্ত অক্সিজেনের সংকট হয়তো দৃশ্যমান হয়নি তবুও অক্সিজেনের অভাবেও মানুষ মারা যাচ্ছে দাবি করে গণস্বাস্থ্যের এ  ট্রাস্টি বলেন, একটা ছোট আকারের অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করতে ৩০ কোটি টাকার মতো প্রয়োজন। সরকারের পক্ষ থেকে এই অর্থ খরচ করা কোনো বিষয় না। হাসপাতালগুলোকে এই অর্থ অনুদান হিসেবে দিলে তারা নিজেরাই প্রয়োজন অনুযায়ী অক্সিজেন উৎপাদন করে নিতে পারে। এক বছর ধরে এই কথাগুলো সরকারকে বলেও কিছু হলো না।

এখনও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনা মোকাবিলা সম্ভব জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, করোনা মোকাবিলা করতে হলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা লাগবে। না হলে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। আর হতাশ হলে চলবে না, এই যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে; আমরা জিতব।

সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ করোনা চিকিৎসা সেবা প্রসঙ্গে জানানো হয়, রাজধানীতে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের বাড়ি গিয়ে চিকিৎসাসেবা দেবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোভিড-১৯ চিকিৎসক দল। করোনা রোগীর বাসা থেকে ফোন করলেই হাসপাতাল সুবিধা সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্সসহ সেখানে চলে যাবেন গণস্বাস্থ্যের চিকিৎসক দল। এজন্য গণস্বাস্থ্যের ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমের চিকিৎসাসেবা পেতে ০১৭০৯-৬৬৩৯৯৪ ও ০৯৬০২১১১৯৪০ এই দুটি নম্বরে ফোন করতে হবে। এছাড়াও সিওডিসিরেড এসওএস (CodcRed SOS) অ্যাপসের মাধ্যমেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে।

গণস্বাস্থ্য জানায়, আজ থেকেই ঢাকার ভেতরে এই সেবা দেওয়া হবে। প্রথমে এই সেবা দেওয়ার জন্যে ঢাকার ধানমন্ডি, কলাবাগান, পুরান ঢাকা ও মিরপুর এলাকাকে নির্বাচন করা হয়েছে। আপাতত সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই সেবা দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে তিনটি দল এই সেবা প্রদান করবে। আইসিইউ সুবিধাযুক্ত অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রতিটি দলে থাকবেন সিনিয়র ও জুনিয়র চিকিৎসক, নার্স, প্যাথলজি টেকনোলজিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট ও স্বেচ্ছাসেবক। দলটির সঙ্গে যাবে একটি মোটরসাইকেল এবং পোর্টেবল এক্সরে মেশিন।

গণস্বাস্থ্য আরও জানায়, গণস্বাস্থ্যের ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম যে ওষুধ দেবে, তার জন্যে কোনো টাকা নেবে না। এ ছাড়া, করোনা পরীক্ষাসহ অন্যান্য যেসব পরীক্ষা করা হবে, সেগুলোর প্রায় অর্ধেক মূল্য নেবে তারা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম অনলাইনে যুক্ত হয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ করোনা চিকিৎসা সেবার উদ্বোধন করেন।

বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ করোনা চিকিৎসা সেবা প্রসঙ্গে বলেন, অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ এটা। এটা যদি ঠিকমতো পরিচালনা করা যায়, সাধারণ মানুষ খুব উপকৃত হবে। করোনা পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না, পেলেও সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ এই সেবা যদি ভালোভাবে দেওয়া যায় মানুষের উপকার হবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত