সিরাজদিখান বড়াম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জলাবদ্ধতা! খেলাধুলা বন্ধ ছাত্রছাত্রীদের
লতা মন্ডল-সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৪০ | আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৪৪
একসময় বড়াম আড়াইবাদীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বিকেল শিশুরা নামত হইচই করে। হাসি-খেলার শব্দে মুখর থাকত চারদিক। ছোট ছোট শিশুরা দৌড়ে বেড়াত, কাঁচা পায়ে ঘাস ছুঁয়ে যেত তাদের স্বপ্ন। কিন্তু আজ সেই মাঠে পা রাখলেই মনে হয়, কেউ যেন ভুল করে পুকুরের ধারে এসে দাঁড়িয়েছে। পানিতে টইটম্বুর,মাঠ নয় একটি পানিতে ভরা আয়না, যেখানে আর ফুটে ওঠে না শৈশবের প্রতিচ্ছবি।
মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের বড়াম আড়াইবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ বর্তমানে জলাবদ্ধতায় ভরপুর। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন এটি একটি পুকুর। সামান্য বৃষ্টি নামলেই জমে ওঠে হাঁটুসমান পানি। খেলার মাঠের প্রাণ হারিয়ে গেছে শিশুরা এখন ক্লাস শেষে নীরবে বাড়ি ফেরে, হাতে ব্যাট বল নয়, চোখে শুধু অপূর্ণতার ছায়া। একসময় যেখানে শিশুদের হাসি-খেলায় মুখর থাকত সেই মাঠ, আজ সেখানে শুধু পানির ঢেউ।
স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মাঠে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠটি পানিতে ডুবে যায়। এখন পুরো মাঠজুড়ে জলাবদ্ধতা থাকায় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। এতে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষক-অভিভাবকরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাছলীমা খাতুন বলেন, আমাদের বিদ্যালয়েরর মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে, যার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত খেলাধুলা করতে পারছে না। খেলাধুলা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। তাই বিদ্যালয়ের মাঠটি দ্রুত মাটি ভরাট করে জলাবদ্ধতা দূর করা প্রয়োজন। এতে শিক্ষার্থীরা আবারও আনন্দের সঙ্গে খেলাধুলা ও বিভিন্ন ক্রীড়া কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে, যা তাদের সার্বিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মাঠটি আমাদের বিদ্যালয়ের প্রাণ। বছরের ৮/৯ মাস মাঠে জলে ডুব থাকায় বর্তমানে এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
অভিভাবক নূর মোহাম্মদ বলেন, আমাদের বড়াম আড়াইবাড়ীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে বাচ্চারা ঠিকভাবে খেলাধুলা করতে পারছে না, এমনকি স্কুলের অনুষ্ঠানও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। মাঠটি যদি দ্রুত ভরাট করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা আবারও আনন্দের সঙ্গে খেলাধুলা ও বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে। আমরা অভিভাবক হিসেবে প্রশাসনের কাছে মাঠ ভরাটের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই।
এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, মাঠটি যথাযথভাবে মাটি ভরাট ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দ্রুত সংস্কার করা হোক, যাতে শিশুদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম আবারও সচল করা যায়। কারণ এই মাঠ শুধু মাটি আর ঘাসের টুকরো নয় এটি গ্রামের শিশুদের স্বপ্নের উঠোন, তাদের বেড়ে ওঠার পাঠশালা। আর সেই মাঠে আজ জল, নিস্তব্ধতা আর অপেক্ষা।
স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেন, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ যদি পুকুরে পরিণত হয়, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত