বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন বলেই জনসম্পৃক্ততা দেখে না: কাদের 

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২১, ১৬:৩১ |  আপডেট  : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৮

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি নেতারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনে জনগণের সম্পৃক্ততা দেখতে পায় না। কারণ তারা নিজেরাই জনবিচ্ছিন্ন। এ কারণেই সুবর্ণজয়ন্তী পালনে জনসম্পৃক্ততা দেখতে পায় না।’ 

৭ মার্চ ও ১৭ মার্চ ঢাকাসহ সারা দেশে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কি বিএনপি দেখতে পায় না- পাল্টা প্রশ্ন রাখেন কাদের। 

বুধবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা শহরে পাতাল রেল (সাবওয়ে) নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শীর্ষক সেমিনারে শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এদেশের সাধারণ মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমেই উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ। দেশের উন্নয়ন  অর্জন যেমনি বিএনপি দেখতে পায় না তেমনি দেখতে পায় না নেতিবাচক রাজনীতির কারণে তাদেরকে জনগণের প্রত্যাখ্যান করেছে। সাম্প্রতিক পৌরসভা নির্বাচন এবং বিভিন্ন উপনির্বাচনে তাই প্রমাণিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে রাষ্ট্রের অর্জন বিএনপি সহ্য করতে পারে না। শেখ হাসিনার অব্যাহত উন্নয়ন যাত্রা এখন বিএনপির গাত্রদাহ। বিএনপি নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গের দর্শনে বিশ্বাসী।’ 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতের সাথে সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরি করেছে শেখ হাসিনা সরকার অপরদিকে বিএনপি তৈরি করেছিলো অবিশ্বাসের কৃত্রিম দেয়াল। যারা গঙ্গার পানি বন্টনের বিষয়টি ভারত সফরকালে বেমালুম ভুলে যায়, তারা আজ তিস্তার পানি বন্টনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই সরকারের সমালোচনার কৌশল এখন তাদের ভোঁতা অস্ত্র হয়ে গেছে।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নগরবাসীর অসহনীয় দুর্ভোগ এবং যানজট ও জনজট মুক্ত রাখতেই সরকার পাতাল রেল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে। ঢাকা শহরে পাতাল রেল নির্মাণের লক্ষ্যে স্পেনের টিপসা'র (Typsa) নেতৃত্বে যৌথভাবে জাপানের পেডিকো (padeco), বিসিএল অ্যাসোসিয়েটস, কেএসসি এবং বেটস কে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।’

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ঢাকা পাতাল রেল নেটওয়ার্কের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১টি রুটের এলাইনমেন্ট প্রস্তাব করে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, যার মধ্যে অগ্রাধিকারভিত্তিতে ৪টি রুট প্রাথমিক ডিজাইন কাজের অন্তর্ভুক্ত। রুট ৪টি হলো ঝিলমিল থেকে টঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার, শাহকবির মাজার রোড হতে সদরঘাট পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার, কেরানিগঞ্জ হতে সোনাপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। 

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আশা করেন এই প্রকল্পটি নির্মাণের ফলে ঢাকা শহরের প্রায় ৮০ লক্ষ কর্মজীবী মানুষের মধ্যে ৪০ লক্ষ মানুষ মাটির নিচে স্থানান্তর হবে এবং মাটির উপরিভাগ যানজট ও জনজট মুক্ত হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্প স্বপ্নের পদ্মাসেতুতে রেলওয়ে এবং সড়কপথের স্ল্যাব বসানোর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এখন পর্যন্ত  মূল সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি শতকরা ৯২.৫০ ভাগ, নদীশাসন কাজ শতকরা ৮০ ভাগ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৮৪.৫০ ভাগ।’

২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ শেষে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলেও জানান সেতুমন্ত্রী। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বিষয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ইতিমধ্যেই প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ একটি টিউবের রিং প্রতিস্থাপনসহ বোরিং কাজ শেষ হয়েছে এবং এরই মধ্যে টিউবটির ২০০ মিটার রোড স্ল্যাব নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় টিউবটির ৭০০ মিটার বোরিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ পর্যন্ত টানেলের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি শতকরা ৬৫ ভাগ।

এছাড়াও সেতু বিভাগের অধীনে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলো হলো মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিআরটি'র এবং ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। 

ঢাকা শহরে পাতাল রেল (সাবওয়ে) নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শীর্ষক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন সেতু সচিব মো. বেলায়েত হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত