হাছান মাহমুদ

কেউ কোলে করে ক্ষমতায় বসাবে না, বিএনপির এই উপলব্ধি ভালো

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:২৯ |  আপডেট  : ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৫

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্যে প্রমাণ হয়, এতদিন পরে তাদের উপলব্ধি হয়েছে যে, কোলে করে কেউ ক্ষমতায় বসাবে না। যারাই নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের সবার ক্ষেত্রে ভিসানীতি প্রযোজ্য হবে, সেটিও মির্জা ফখরুল সাহেব বা বিএনপি বুঝতে পেরে কর্মীদের বলেছেন— আন্দোলন করতে হবে। তাদের এই উপলব্ধি ভালো।

রবিবার (৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে ১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের প্রকাশিত শ্বেতপত্র ‘হোয়াইট পেপার অন ক্রাইসিস অব ইস্ট পাকিস্তান’ পুনঃমুদ্রণের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। শ্বেতপত্রের পুনঃমুদ্রণকারী সংস্থা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া, পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আলী সরকার, তথ্য অধিদফতরের উপপ্রধান তথ্য অফিসার নাসরিন জাহান লিপি মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন। 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবদের আগের উৎফুল্লভাব এখন আস্তে আস্তে ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে। কারণ, তারা বুঝতে পারছে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে যাবে এবং কেউ তাদের কোলে করে ক্ষমতায় বসাবে না। অনেক রাজনেতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। বিএনপিরও অনেকেই অংশগ্রহণ করবে। তৃণমূল বিএনপিতে তো ইতোমধ্যেই কয়েকজন বিএনপি নেতা যোগদান করেছেন।’

‘সুতরাং, তাদেরকে অনুরোধ জানাবো— নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার পথ পরিহার করে নির্বাচনে আসার জন্য, বাস্তবতা বিবর্জিত না হয়ে বাস্তবতা মেনে নিয়ে নির্বাচনের পথে হাঁটার জন্যই তাদের প্রতি অনুরোধ জানাবো’ বলেন হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কোন দল অংশগ্রহণ করলো, সেটির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে— জনগণ অংশগ্রহণ করলো কিনা। সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নেয়নি। কিন্তু ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ সেখানে ভোট দিয়েছে এবং নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি আসে— তাদের আমরা স্বাগত জানাই। আমরা চাই, তারা অংশগ্রহণ করুক। কিন্তু না আসলেও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে। নির্বাচন অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হবে।’

নির্বাচনকালীন সরকারের আকার ছোট করা হবে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, এটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার ছোট করার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। প্রধানমন্ত্রী যেকোনও সিদ্ধান্তই গ্রহণ করতে পারেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন সরকার ছোট করা হয়নি। যে সরকার ছিল সেই সরকারই দায়িত্ব পালন করেছে।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল শনিবার দেশে এসেছে, এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি তো ভালো। কারণ, বিদেশিদের আগ্রহ আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। জঙ্গি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে, আমাদের উন্নয়নে, সব জায়গায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতার সম্পর্ক আছে। তাদের যে প্রতিনিধি দল এসেছে, আমি মনে করি সেটি ভালো।’

এর আগে পুনঃমুদ্রিত শ্বেতপত্রটির মোড়ক উন্মোচনকালে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে ‘ইস্ট পাকিস্তান ক্রাইসিস’ শিরোনামে যে শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছিল, সেটি পড়লেই বোঝা যাবে যে, আসলে মুক্তিযুদ্ধে কে নেতৃত্ব দিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ কাকে ঘিরে হয়েছে। এই শ্বেতপত্রের কোনও জায়গায় জিয়াউর রহমানের নাম নাই। অথচ এ দেশে খলনায়কদের নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এই শ্বেতপত্রে পাকিস্তান সরকার আগাগোড়াই বঙ্গবন্ধুকে অভিযুক্ত করেছে এবং আরও  কিছু নেতার নাম এসেছে, যারা আওয়ামী লীগ নেতা এবং জাতীয় নেতা হিসেবে সমাদৃত। সঠিক ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত সহায়ক একটি প্রকাশনা এবং এটি পুনঃমুদ্রণের জন্য চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদফতরকে ধন্যবাদ জানাই।’


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত