সমুদ্রের প্লাস্টিকগুলি মাছকে ছাড়িয়ে যেতে পারে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২২, ১৩:৪৯ |  আপডেট  : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:২৭

যখন কোন অপচনশীল দ্রব্য ব্যবহার করি তখন অপচয়গুলি কোথায় যায়, কখনো হয়তো ভেবে দেখিনি। যেমন, প্লাস্টিকের বোতল, চিপসের প্যাকেট ও অন্যান্য বর্জ্য।   

পুনর্ব্যবহারযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমাদের উত্পাদিত বেশিরভাগ বর্জ্য জৈব বিস্তৃত নয়, যার অর্থ এটি ভেঙে পৃথিবীতে ফিরে আসে না, এটি একটি প্রক্রিয়া "পচন" নামে পরিচিত। কিছু প্লাস্টিকের ক্ষয় হতে ১০০০ বছর সময় লাগে।

তবে সবাই পুনর্ব্যবহার করে না এবং অনেকেই কীভাবে সঠিকভাবে পুনর্ব্যবহার করতে হয় তা জানেন না। ফলস্বরূপ, বিশ্বের ৯১% প্লাস্টিক কখনও পুনর্ব্যবহারযোগ্য হয় না এবং এই বর্জ্যের বেশিরভাগ অংশ স্থলপথে শেষ হয় বা আমাদের জমি ও মহাসাগরে লিটার হয়ে যায়, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক অনুযায়ী। আমরা যদি কিছু না করি তবে একুশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে সমুদ্রের প্লাস্টিকগুলি মাছকে ছাড়িয়ে যেতে পারে [এলেন ম্যাকআর্থার ফাউন্ডেশন থেকে রিপোর্টস]।

রিসাইক্লিং আমাদের সকলের করা উচিত, তবে সমস্যাটি সমাধান করার পক্ষে এটি যথেষ্ট নয়। আমাদের গ্রহটি সংরক্ষণ করার জন্য, আমাদের ব্যবহার করা প্লাস্টিকের পরিমাণও হ্রাস করতে হবে। আরও গুরুত্বপূর্ণ, কর্পোরেশনগুলিকে তাদের পণ্য এবং প্যাকেজিংয়ে এত বেশি প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। 

১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত, আমেরিকা রিসাইক্লস ডে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি জাতীয়-স্বীকৃত দিন যা পুনর্ব্যবহারকে উত্সাহিত করে এবং উদযাপন করে। এই দিনটি জনগণকে তাদের খাওয়ার অভ্যাস সম্পর্কে শিক্ষিত করতে, তাদের প্রতিদিনের ভিত্তিতে পুনর্ব্যবহার করতে উত্সাহিত করা এবং কীভাবে সঠিক উপায়ে পুনর্ব্যবহার করতে হয় তা শেখানোর জন্য এই দিন। আমেরিকা রিসাইকেল দিবস একটি উদ্যোগ আমেরিকা সুন্দর রাখুন, পরিবেশ দূষণ বন্ধ করার জন্য নিবেদিত একটি অলাভজনক। 

বাংলাদেশে প্রায় ১৯৮০ সালের দিক থেকে জাহাজ শিল্পক্ষেত্রে রিসাইক্লিং বেশ তোড়জোর করে শুরু হয়। এমনকি এক পর্যায়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম “শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড” হিসেবে খ্যাতিলাভ করে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে অবস্থিত শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড’টি। সেখানে প্রায় ২ লক্ষ বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োজিত আছেন। তাছাড়া বাংলাদেশের মোট ইস্পাতের প্রায় অর্ধেক আসে এই চট্টগ্রাম শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড থেকে। তারপরেও খারাপ খবর আছে। একমাত্র নিরাপত্তা বা সংরক্ষনের অভাবে সম্প্রতিই (২০১৪ সাল) একটি কোম্পানী এখানে তাঁদের ব্যাবসায় গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশের মত ক্ষুদ্র একটি দেশ এবং যে দেশে দুর্যোগ আক্রমনের সম্ভাবনা অনেক বেশি, সেখানে কতটুকু নজর দেয়া হয় রিসাইক্লিং এর ক্ষেত্রে? নিজ নিজ আগ্রহে বা চেষ্টায় ব্যাক্তিপর্যায়ে আমরা কেউ কেউ হয়তো রিসাইক্লিং-এর সাথে পরিচিত এবং অভ্যস্ত। কিন্তু সামগ্রিকভাবে যতটুকু সচেতনতা আছে সকলের মাঝে, বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে তা কি আসলেই  যথেষ্ট? অনেক ধরণের প্রচারণা বা সচেতনতা যে তৈরী করা হচ্ছেনা, তা নয়। একটু পেছন ফিরে তাকালেই হয়তো খেয়াল করবো, পলিথিন ব্যাগ বা এ জাতীয় যেকোনো সামগ্রীর ব্যাবহার একসময় নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো, যেহেতু পলিথিন পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কিন্তু বর্তমানে? ঐ যে কথায় বলেনা; যেই লাউ, সেই কদু!

ভবিষ্যত পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে টিকে থাকতে হলে, বাংলাদেশকে রিসাইক্লিং-এর সাথে পুরোদস্তুরভাবে অভ্যস্ত করা সত্যিই ভীষণ জরুরী হয়ে পড়েছে। আমরা যদি এখন থেকেই স্কুলের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের মনে রিসাইক্লিং এর এই পুরো বিষয়টি মজার এবং আনন্দদায়ক হিসেবে গেঁথে দিতে পারি, তবে ভবিষ্যতের জন্য আর কোনো চিন্তাই হয়তো করতে হবেনা! এর পাশাপাশি আমেরিকা বা অন্যান্য দেশে কিভাবে রিসাইক্লিং করা হচ্ছে, তা যদি মানার চেষ্টা করি, তবে নিজেরাই অনেক বেশি বুঝতে সক্ষম হবো কিভাবে নতুন নতুন চিন্তার বাস্তবায়ন ঘটানো যায়। চলুন ব্যাবহার্য জিনিসটি ফেলে দেয়ার আগে একটু ভাবি, এর থেকে নতুন কিছু তৈরী করা সম্ভব নয়তো !

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত