আদমদীঘির রক্তদহ বিলে চায়না দুয়ারি জালের ফাঁদে পড়ে ধংস হচ্ছে দেশিয় প্রজাতির মাছ
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:১৪ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:২৮
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রক্তদহ বিলে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল (রিং জাল) দিয়ে অবাধে চলছে মাছ শিকার। কারেন্ট জালের পর এবার খাল বিলের মাছ নিধন করছে ভয়ঙ্কর চায়না দুয়ারি জাল। জালের ফাঁদে পড়ে ধংশ হচ্ছে ছোট বড় দেশিয় প্রজাতির মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী। এই জালে বড় মাছ থেকে শুরু করে রেণু পোনা পর্যন্ত ধড়া পড়ার কারনে ক্রমেই মাছশূন্য হয়ে পড়ছে উপজেলার নদী, খাল-বিল ও জলাশয়।
এলাকাবাসির অভিযোগে জানা গেছে, এক শ্রেণির অসাধু মৎস্য শিকারী (জেলে) বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই জাল দিয়ে মাছ নিধনে। বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই নদী ও খাল বিলে অসাধু মাছ শিকারীরা চায়না দুয়ারি জাল ফেলছে। কৌশলগত কারনে সকল প্রকার মাছ এই জালে আটকা পড়ে। জাল থেকে বড় মাছ মাছ সংগ্রহ করার পর সকল রেণু মাছ ও বিভিন্ন জলজ প্রাণী শিকারীরা শুকনা জায়গায় ফেলে রেখে যায় । পরে শুকনা স্থানে থেকে রেণু পোনা ও জলজ প্রাণী মরে যায়। চায়না দুয়ারি জালে চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, কই, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকিসহ সব ধরনের মাছ ধড়া পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ চায়না দুয়ারি জালে মা মাছ ও রেণু মাছ নিধন হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে মাছের প্রজননও অনেক কম হয়েছে। হাট বাজারে দেখা মিলছেনা দেশীয় প্রজাতির মাছের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে সহ¯্রাধিক জেলে পরিবার রয়েছে। তারা সারা বছর মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। বেশির ভাগ জেলে সুতি জাল ও খলসানি,বৃত্তি দিয়ে মাছ শিকার করে থাকে। কিন্তু কিছু অসাধু জেলে এবং গৃহস্থরা চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করছে। চায়না দুয়ারি জালের কারনে জেলেদের অন্যান্য জালে মাছ পরছেনা। ফলে মাছ না পেয়ে অনেক জেলে বেকার হয়ে পরেছে।
উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন বলেন, নদী ও খাল বিলে যে হারে নিষিদ্ধ এই চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহার হচ্ছে তাতে এটি বন্ধ না হলে হয়তো বা আর মিলবে না দেশী প্রজাতির মাছ। উপজেলার প্রসাদখালি গ্রামের জেলে সুজিত হালদার বলেন, রক্তদহ বিল ও এর সকল শাখা খালে ব্যাপক হারে চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মাছ ধড়া হচ্ছে । এই জালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধড়া পড়ে কিন্তু এই জাল ব্যবহারের কারনে মাছের ডিম ও রেণু পোনা ধংস হয়ে যাচ্ছে ।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাহিদ হোসেন বলেন, আমরা এগুলোর প্রতিরোধে অভিযানও পরিচালনা করছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে জাল আটক ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা রোমানা আফরোজ বলেন, নিষিদ্ধ চায়না জাল (রিংজাল) ব্যাবহার বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনভাবেই নিষিদ্ধ রিংজাল দিয়ে মাছ ধরতে দেয়া যাবে না।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত