লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকসের অ্যাকাডেমিক নির্দেশনায় ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশেই ইউওএল ডিগ্রি
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২২, ১৯:১৯ | আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:৪০
[ঢাকা, ২৭ অক্টোবর, ২০২২] বাংলাদেশে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের [ইউওএল) অংশীদার হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদিত দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ [ইউসিবি]। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সমাজবিজ্ঞানে বিশ্বব্যাপী তৃতীয় র্যাংকিংয়ে থাকা লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকসের [এলএসই) অ্যাকাডেমিক নির্দেদেশনায় অনুযায়ী বেশ কিছু বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এলএসই’র অ্যালামনাই ও সম্পৃক্তদের মধ্যে মধ্যে ১৮ জন নোবেলজয়ী এবং ৩৭ জন সাবেক ও বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান রয়েছেন। কিউএস গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং অনুযায়ী বিশ্বখ্যাত এই প্রতিষ্ঠানটির এমপ্লয়িবিলিটি স্কোর ১০০ তে ৯৯.৯।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকসের শতভাগ পাঠ্যক্রম ও পরীক্ষার মাধ্যমে ইউসিবি’র প্রদত্ত ডিগ্রিগুলোর মধ্যে রয়েছে বিএসসি বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, বিএসসি ফাইন্যান্স এবং বিএসসি অ্যাকাউন্টিং ও ফাইন্যান্স। টিউশন ফি’তে সাশ্রয় ছাড়াও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত স্কলারশিপের সুযোগ। পাশাপাশি, এ ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিশ্বের ২শ’ দেশে ১ লাখেরও বেশি ইউওএল অ্যালামনাইয়ের এলিট গ্লোবাল কমিউনিটির অংশ হওয়ার সুযোগ পাবেন।
এ উপলক্ষে, আজ ২৭ অক্টোবর রাজধানীর গুলশান-১ -এ অবস্থিত এসএ টাওয়ারের ইউসিবি ক্যাম্পাসে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার মান্যবর রবার্ট ডিকসন, লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকস এক্সটেনডেড এডুকেশনের ডিন অধ্যাপক উইম এ ভেন দার স্টু সহ আরও অনেকে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসটিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান বব কুন্দানমাল বলেন, “বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতার কারণেই দেশে বসে আন্তর্জাতিক শিক্ষাগ্রহণের নতুন যুগের সূচনা করতে পেরেছে এসটিএস গ্রুপ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি এবং অনুমোদনের কারণেই এখন দেশে বসে বিদেশের শিক্ষাগ্রহণ অর্জন করা সম্ভব হবে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উচ্চআয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার যে জাতীয় লক্ষ্য, তার অংশ হিসেবে উচ্চ-প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।”
বব কুন্দানমাল এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের [ইউজিসি] পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানান। উচ্চশিক্ষার কৌশলগত পরিকল্পনা ২০১৮-২০৩০ বাস্তবায়নের জন্য এই ধন্যবাদ জানান তিনি। কৌশলগত এই পরিকল্পনায় প্রতিবছর দেশের স্কুল থেকে পাশ করা ১০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য সুযোগ তৈরির পাশাপাশি বিশ্বমানের শিক্ষা সাশ্রয়ে প্রাপ্তির রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। এছাড়া, এ পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, বিশ্বমানের এই শিক্ষার সাথে মেয়ে শিশুদের যুক্ত করা, যে বিষয়টি নিয়ে ডা. দীপু মনি অনেকদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার এই রাষ্ট্রে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। এবং বাংলাদেশে এ উদ্যোগ বাকি রাষ্ট্রগুলোর জন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ এসটিএস গ্রুপেরই একটি অংশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এভারকেয়ার হসপিটালস, ডিপিএস এসটিএস স্কুলস ও ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার (আইএসডি) মতো শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এসটিএস গ্রুপের অধীনে পরিচালিত হয়। গ্রুপটি আরেকটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল চালু করা নিয়ে কাজ করেছে।
বাংলাদেশে মোনাশ পাথওয়ে প্রোগ্রাম চালু করে এবং দেশের শিক্ষার্থীদের মোনাশের ডিগ্রি অর্জনের যাত্রা শুরু করার সুযোগ তৈরি করে গত বছরে ইতিহাস গড়ে ইউসিবি [টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাঙ্কিং অনুযায়ী, মোনাশ ইউনিভার্সিটির র্যাংকিং ৪৪]। এ বছর, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের অ্যাকাডেমিক নির্দেশনায় ডিগ্রি চালুর মাধ্যমে ইউসিবি দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ তৈরিতে এর উদ্যোগ গ্রহণের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে।
দেশে বসেই এই আন্তর্জাতিক অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রামের উচ্চশিক্ষা নানা ধরনের সুযোগ তৈরি করে। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের সিনিয়র ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারিফ মুনির তার মূল বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়তে যাওয়া বাবদ বছরে সাড়ে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ ব্যয় হয়; এমন প্রেক্ষাপটে এ ধরনের প্রোগ্রাম সমূহের দেশের ডলার রিজার্ভে ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।”
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীগণ শিক্ষাখাতে অভুতপূর্ব রূপান্তরে ভূমিকা রেখেছেন। ইউওএল/এলএসই’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. দীপু মনি বলেন, “চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এক্ষেত্রে মূল স্তম্ভ: সমতা, ইনস্টিটিউশন ও দক্ষ জনশক্তি, আর এসব ক্ষেত্রে দ্রুত প্রবৃদ্ধিশীল বাংলাদেশকে বৈশ্বিকভাবে অনন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য বক্তাদের বক্তব্যেও এ বিষয়ের প্রতিফলন ঘটে। অধ্যাপক উইম এ ভেন দার স্টু, ডিন অব এক্সটেন্ডেড এডুকেশন, এলএসই বলেন, “ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ এখন আমাদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্কের অংশ। ইউসিবি’তে এখন বিশ্বখ্যাত এলএসই’র অ্যাকাডেমিক নির্দেশনায় ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ রয়েছে। এ ডিগ্রি অর্জনের যাত্রায় শিক্ষার্থীরা যা কিছু শিখবেন, তার সবকিছুই এলএসই’র ফ্যাকাল্টিদের, যারা একইসাথে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সমাজ বিজ্ঞানী ও গবেষক, তত্ত্বাবধানে ডিজাইন করা হয়েছে। তারাই এটা ডিজাইন করেছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন এবং যাচাই-বাছাই করেছেন। যাতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের বিষয়গুলো সম্পর্কে আরও গভীর জ্ঞান অর্জন করতে পারেন এবং ভবিষ্যতে চাকরির বাজারে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। বাংলাদেশে এই প্রোগ্রামগুলো নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ইউসিবি’র সাথে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত