রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পুলিশ’ ভাবনা
প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৪০ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:১৪
উপমহাদেশের পুলিশ কাঠামোর বৈশিষ্ট্য এবং চরিত্র সাবলীলভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে রবীন্দ্র-সাহিত্যকর্মে। একইভাবে পুলিশের প্রতি সমসাময়িক মানুষের চিন্তা, আশা, বিতৃষ্ণা ও অভিজ্ঞতার বাস্তব চিত্র অঙ্কিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের পুলিশ ভাবনায়। সেই সঙ্গে পুলিশ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এ নিয়ে কঠোর সমালোচনাও করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
আবার, পুলিশ ছাড়া সাধারণ মানুষের যে গত্যন্তর নেই, তা-ও তিনি উপলব্ধি করেছিলেন। তা ছাড়া সমাজ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশেরও যে পরিবর্তন ঘটবে তাও রবীন্দ্রনাথ ব্রিটিশ আমলে দূরদৃষ্টির মাধ্যমে সবার চোখের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ব্রিটিশ আমলে পুলিশ বাহিনী গঠিত হয়েছিল ভারতে ব্রিটিশ সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য। ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন ঔপনিবেশিক শাসনের জন্য উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছিল। ঔপনিবেশিক পুলিশ ছিল অধিকাংশ ক্ষেত্রে জনবিরোধী। স্বভাবতই তখন পুলিশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ ছিল অত্যধিক। রবীন্দ্রনাথও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। তিনি প্রায়শই সেই ক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। বিভিন্ন রচনায় পুলিশ প্রসঙ্গে কবিগুরু যে সব মন্তব্য করেছেন তার মধ্যে অধিকাংশ উক্তি আকর্ষণীয় ও ভাবব্যঞ্জনাময়।
পুলিশ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের কিছু কথা তার সূক্ষ্ম রসবোধের পরিচয় বহন করে। বাংলা সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই, যেখানে রবীন্দ্রনাথ বিচরণ করেননি। সাহিত্য জগতের এই বিশাল সৃষ্টি তাকে নিয়ে গিয়েছিল মানবজীবনের সবাই ক্ষেত্রে। আবিষ্কার করতে সাহায্য করেছিল সমাজব্যবস্থার জটিল কাঠামো। সমাজব্যবস্থার এই জটিল কাঠামোর মধ্যে যে সমন্বিত মিথস্ক্রিয়া প্রয়োজন; তা রক্ষার্থে সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে পুলিশ।
যুগে যুগে মানুষের রক্ষক হিসেবে পুলিশের যে ভূমিকা তাও বিভিন্ন আঙ্গিকে ফুটে উঠেছে রবীন্দ্র-রচনার নানা প্রান্তে। তবে বাদ পড়েনি রক্ষক যে অনেক সময় ভক্ষকের ভূমিকা নেয়- তা সাহিত্যে ফুটিয়ে তোলার রাবীন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। আবার একজন মানুষ হিসেবে নিজের জীবনে পুলিশের সঙ্গে কবিগুরুর বিভিন্ন ঘটনাও পুলিশ সম্পর্কে তার ভাবনাকে করেছে প্রভাবিত। কিছু ক্ষেত্রে যা সুসংহত; কিছু ক্ষেত্রে বিক্ষিপ্ত। রবীন্দ্রনাথের প্রথম জীবন থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত; এমনকি মৃত্যুর পরেও পুলিশের সঙ্গে তার বিভিন্ন কাহিনী এবং তার সাহিত্যকর্মের নানা ক্ষেত্রে পুলিশের উল্লেখ যেন পুলিশ সম্পর্কে তার ভাবনারই বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে বারংবার।
পুলিশকে নিয়ে আমাদের যে চিরায়ত ভীতিকর ধারণা : তার একটি চমৎকার প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পাই কবিগুরুর পূরবী কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত এই কবিতায় :
ঘরের খবর পাইনে কিছুই, গুজব শুনি নাকি/ কুলিশপাণি পুলিস সেথায় লাগায় হাঁকাহাঁকি।/ ...সিমলে নাকি দারুণ গরম শুনছি দার্জিলিঙে,/ নকল শিবের তান্ডবে আজ পুলিস বাজায় শিঙে।
ঔপনিবেশিক পুলিশ ছিল অধিকাংশ ক্ষেত্রে জনবিরোধী। স্বভাবতই তখন পুলিশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ ছিল অত্যধিক। রবীন্দ্রনাথও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। তিনি প্রায়শই সেই ক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়েছেন
মূলত, ১৯২৪ সালের অক্টোবরে কবিগুরুর দক্ষিণ আমেরিকা সফরের সময় ব্রিটিশ সরকার জারি করে জঘন্য গণবিরোধী অর্ডিন্যান্স যার নাম ছিল ‘বেঙ্গল ক্রিমিন্যাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অর্ডিন্যান্স ১৯২৪।’ সেই অর্ডিন্যান্সের বদৌলতে জেলে পুরা হয় বহু যুবককে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনেস আইরেসে বসে কবি লিখে ফেলেন এই কবিতাটি যাতে সুস্পষ্টভাবে যে-কোনো অত্যাচারী সরকারের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে পুলিশ বাহিনীর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। তবে শুধু দমনের জন্যই নয়; যাতে কোনো আন্দোলন দানা বাঁধতে না পারে তার জন্যও পুলিশকেই চিরকাল ব্যবহার করেছে রাষ্ট্রযন্ত্র। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনে তার মাত্রা ছিল আরও বেশি। সেই অবস্থাই যেন ছন্দ পেয়েছিল কবিগুরুর ঝিনেদার জমিদার কবিতায় :
ভয় ছিল কোনোদিন প্রশ্নের ধাক্কায় / পার্লিয়ামেন্টের হাওয়া পাছে পাক খায়।/ এডিটর বলে, এতে পুলিসের গাফেলি।/ পুলিস বলে যে, চলো বুঝেসুঝে পা ফেলি;/ ভাঙল কপাল যত কপালেরই দোষ সে,/ এসব ফসল ফলে কন্গ্রেসি শস্যে।
এছাড়া ‘স্বদেশী সমাজ’ প্রবন্ধের পরিশিষ্টে পুলিশ-নির্ভরতার ওপর কটাক্ষ করে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, যেদিন কোনো পরিবারে সস্তানদিগকে চালনা করিবার জন্য পুলিসম্যান ডাকিতে হয়, সেদিন আর পরিবার রক্ষার চেষ্টা কেন। সেদিন বনবাসই শ্রেয়। একই প্রসঙ্গে ‘দেশনায়ক’-এ রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “ঘরে আগুন লাগিলে কি পুলিসের থানাতে খবর পাঠাইয়া নিশ্চিন্ত থাকিবে। ইতোমধ্যে চোখের সামনে যখন স্ত্রী-পুত্র পুড়িয়া মরিবে তখন দারোগার শৈথিল্য সন্বন্ধে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নালিশ করিবার জন্য বিরাট সভা আহ্বান করিয়া কি বিশেষ সাত্ত্বনা লাভ করা যায়?”
সাধারণ মানুষের ধারণা, পুলিশের কাছে কোনো কাজের জন্য গেলে টাকা লাগে বা পুলিশ টাকা ছাড়া কাজ করে না। এ কারণে অনেকেই পুলিশের কাছে যাওয়ার আগে টাকা নিয়ে যান। কিন্তু যখন দেখা যায়, টাকা ছাড়াই পুলিশ কাজটি করে দিয়েছে, তখন তারা খুব অবাক হন। আবার সব পুলিশ যে ঘুষ নেয় না, তা-ও নয়। পুলিশকে ঘুষ দেয়ার এই ‘রীতি’ নতুন নয়, ব্রিটিশ আমলেও ছিল। পুলিশকে ঘুষ দেয়ার রেওয়াজ নিয়ে রবীন্দ্রনাথের ভাবনা উঠে এসেছে তার ‘আত্মপরিচয়’এ। সেখানে তিনি লিখেছেন, পুলিস দারোগা যদি ঘুষ লইয়া বলপূর্বক অন্যায় করে তবে দুর্বল বলিয়া আমি সেটাকে হয়তো মানিতে বাধ্য হইতে পারি কিন্তু সেইটোকেই রাজশাসনতন্ত্রের চরম সত্য বলিয়া কেন স্বীকার করিব? তেমনি হিন্দুসমাজ যদি ধোবানাপিত বন্ধ করিবার ভয় দেখাইয়া আমাকে বলে অমুক বিশেষ ধর্মটাকেই তোমার মানিতে হইবে কারণ এইটেই হিন্দুধর্ম- তবে যদি ভয় পাই তবে ব্যবহারে মানিয়া যাইব কিন্তু সেইটেই যে হিন্দুসমাজের চরম সত্য ইহা কোনোক্রমেই বলা চলিবে না। যাহা কোনো সভ্য সমাজেরই চরম সত্য নহে তাহা হিন্দু সমাজেরও নহে ইহা কোটি কোটি বিরুদ্ধবাসীর মুখের উপরেই বলা যায়- কারণ, ইহাই সত্য। পুলিশ জোর করে ঘুষ নিলে বা গুরুতর অপরাধ করলে ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ আইনের আশ্রয় নেয়া দূরে থাক, হয়রানির ভয়ে নাম পর্যন্ত প্রকাশ করতে চান না। যদিও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইনের দৃষ্টিতে প্রত্যেক নাগরিক সমান এবং আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকারী। রাষ্ট্রের যে কোনো নাগরিকের আইনের আশ্রয়লাভের অধিকার আছে। কিন্তু বাস্তবতা কিছুটা ভিন্ন।
ব্রিটিশ শাসনামলে পুলিশকে হাঁটতে হয়েছিল ঔপনিবেশিক শাসকদের দেখানো পথ ধরে। সেই সময়ে কবিগুরুকে অতি স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যক্ষ করতে হয়েছিল একটি চরম নিপীড়ক এবং সেই ঔপনিবেশিক শাসকদের তল্পিবাহক পুলিশ বাহিনী। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতারই প্রতিফলন ঘটেছিল তার সাহিত্যকর্মে। আবার, রবীন্দ্রনাথ যে তার লেখায় পুলিশ সম্পর্কিত শুধু নেতিবাচক দিকগুলোকেই ফুটিয়ে তুলেছিলেন; ব্যাপারটি তা নয়। কবিগুরুর লেখায় পুলিশ সম্পর্কে ফুটে উঠেছিল বহু ইতিবাচক বিষয়ও। কবিগুরু তার বিভিন্ন সাহিত্যকর্মে পুলিশের যেই ইতিবাচক গুণগুলো চিত্রিত করেছিলেন, তা আজও আমাদের সমাজব্যবস্থাকে ধরে রেখেছে সুসংহতভাবে। মানুষের প্রয়োজনে, বিপদে-আপদে যেভাবে পুলিশকে দেখতে পাওয়া যায়। কবিগুরুর সাহিত্যকর্মেও রয়েছে তার অগণিত উদাহরণ। রাবীন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাই পুলিশকে তুলে ধরতে হলে প্রয়োজন হবে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্ম উপস্থিত পুলিশ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ঘটনার; দরকার হবে পুলিশী চরিত্রগুলোর জীবনের ইতিবাচক, নেতিবাচক, আত্মত্যাগ-সবাই দিক নিয়ে আলোচনার। তবে আর যাই হোক পুলিশের চাকরি যে-কোনো ব্যক্তিকে সমাজে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত অবস্থানের নিশ্চয়তা দেয়; দেয় সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা। এমনকি একজন পুলিশের যে-কোনো কর্মের জন্যই রাষ্ট্রযন্ত্র নিশ্চিত করে নেয় পর্যাপ্ত পদক্ষেপ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘কর্তার ইচ্ছায় কর্ম’ প্রবন্ধ যেন সেই নিশ্চয়তারই এক সাহিত্যিক বহি:প্রকাশ।
কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ধারণার কথাও রবীন্দ্রনাথ দিয়েছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নাগরিকের উপস্থিতি নিশ্চিতের এ ধারণাটি ‘অবস্থা ও ব্যবস্থা’ প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন, “যাহাতে মামলা-মোকদ্দমায় লোকের চরিত্র ও সম্বল নষ্ট না হইয়া সহজ বিচারপ্রণালীতে সালিশ-নিষ্পত্তি দেশে চলে তাহার ব্যবস্থা করা কি আমাদের সাধ্যতীত? সমস্তই সম্ভব হয়, যদি আমাদের এই সবাই স্বদেশী চেষ্টাকে যথার্থভাবে প্রয়োগ করিবার জন্য একটা দল বাঁধিতে পারি।” ব্রিটিশ আমলে পুলিশি অত্যাচারের গল্প এবং তাদের প্রতি মানুষের অনাস্থার জন্য পুলিশের নিজস্ব লোভ লালসা হয়ত কিছতা দায়ী। কিছতা দায়ী পুলিশের কাজের ধরনটাও। কিন্তু বেশিরভাগটাই দায়ী পুলিশের উপর ব্রিটিশ সরকারের চাপ। মুখ বুজে পুলিশকেও অনেক দুঃখ-কষ্ট পোহাতে হয়, যা সাধারণ মানুষের জানার কথা নয়। ব্রিটিশনের দ্বারা সৃষ্টি পুলিশি ব্যবস্থা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের নেতিবাচক ধারণা যেমন ছিল, তেমনি ছিল ইতিবাচক ধারণাও। যার প্রমাণ পাওয়া যায় তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তা পঞ্চানন ঘোষালের লেখায়। পুলিশের চাকরি বা ক্ষমতাকে জনসেবা করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখতেন রবীন্দ্রনাথ। পঞ্চানন ঘোষাল লিখেছেন, ‘ঠাকুরবাড়ীর দুটি চুরির মামলার কিনারা করায় খুশি হয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন যে মিশনারিদের অপেক্ষা পুলিশের জনসেবার সুযোগ বেশি।’
করোনা মহামারীকালে বাংলাদেশের পুলিশের রয়েছে অবিস্মরণীয় অবদান। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ পুলিশের সবাই সদস্য একসঙ্গে সাধারণ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। চিকিৎসা সেবা, খাদ্য, পরিবহন, ঔষধ সরবরাহ থেকে শুরু কর মৃত মানুষের দাফন/সৎকার এ সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। একটিই স্লোগান ছিল সবাই পুলিশ সদস্যের অন্তরে : ‘প্রত্যয় একটাই মানবিক পুলিশ হতে চাই’।
রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন যে, উপমহাদেশের তৎকালীন পুলিশ সেই সমাজেরই প্রতিনিধি এবং ইচ্ছা করলেই ইংরেজশাসিত ও আশ্রিত সেই পুলিশকে সহজেই বদলানো সম্ভবপর ছিল না। পুলিশ সম্পর্কে কখনও কখনও নেতিবাচকতার মধ্যেও ইতিবাচকতার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি, যে ইঙ্গিতের মধ্যে পুলিশ সংস্কারের বিষয়টি প্রণিধানযোগ্য। তবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আচ্ছন্ন ও পুলিশি স্বীয় সাব-কালচারে তমসাচ্ছন্ন তৎকালীন সেই পুলিশের পরিবর্তনের পক্ষে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, যার পথে বাধা হিসেবে তিনি চিহ্নিত করেছেন সমাজ ব্যবস্থার জটিলতম পরিকাঠামোকে। অতীত হতে সাম্প্রতিক বাস্তবতায় আশা-ভরসায়, প্রয়োজনে, এমনকি অপ্রয়োজনেও মানুষকে পুলিশের দ্বারস্থ হতে হয়।
এ সমাজে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ বাহিনীকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রিটিশ সময়কালের কলোনিয়াল পুলিশ বলে আখ্যায়িত করে তার ভাবনার প্রতিফলন দেখিয়েছেন। সে ধারাবাহিকতায় বর্তমান পুলিশ বাহিনী সেরকম ভাবনায় বিবেচনা করা বর্তমান স্বাধীন ও সাবভৌম রাষ্ট্রে মোটেই কাম্য নয়। আমাদের পুলিশ বাহিনী হবে আধুনিক পুলিশ বাহিনী। বিশ্বের উন্নত দেশের পুলিশের সেবায় আইনশৃঙ্খলার রক্ষা আদর্শ হিসেবে মেনে নিয়ে আমাদের পুলিশ প্রশাসনকে ঢেলে সাজাতে হবে। উন্নয়ন ও সংস্কারের কথা ভাবতে হবে। অন্যথায় রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ হবে দুর্বিষহ জঞ্জালময়। দুর্ভোগ ও পীড়ন জাতিকে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু জাতিতে পরিণত করবে। কোন সচেতন ও সভ্য জনগণের কাছে একটি দুর্ভাগা জাতি কখনই কাম্য নয়।
লেখক : ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ
[সাবেক উপমহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি]
সৌজন্যে : সংবাদ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত