পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের আড়ালে ষড়যন্ত্র দেখছে বিএনপি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৯ |  আপডেট  : ১ জুলাই ২০২৫, ১৭:৫০

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নেওয়ার আলোচনা চলছে। নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে বাড়ছে আলোচনা-সমালোচনা। সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি সামনে আনলে এর ঘোর বিরোধিতা করছে বিএনপি।

বিএনপির শীর্ষ নেতারা সোমবারের (৩০ জুন) বিভিন্ন কর্মসূচিতেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। পাশাপাশি কারো ধমকের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত হতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।

সম্প্রতি বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের চীন সফরের প্রাপ্তি এবং সফরের বিষয়বস্তু এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তষ্টির বিষয়টিও আলোচনা করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে পারে, তবে সেটিকে ঘিরে যদি কেউ দেশের জনগণের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব তৈরি করতে চায়, তাহলে বলা যায় তারা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের মূল আদর্শে বিশ্বাস করে না।

সোমবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সাধারণ সভায় মঈন খান আরও বলেন, আজ যারা বড় বড় কথা বলেন, তাদের অনেকেই ভুলে যান, এই দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ করেছে ছাত্রসমাজ, যার ৮০-৯০ শতাংশই বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেছে। তবে তারা কখনও তা মুখে বলেনি বরং নিজেদের পরিচয় দিয়েছে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে। বাংলাদেশ কারও একক মালিকানার সম্পত্তি নয়। এক বছর আগে আওয়ামী লীগ সেটাই ভাবতে গিয়ে তার ফল ভোগ করেছে। এখনও কেউ যদি একই ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে, তবে সেটা হবে মারাত্মক ভুল।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের আড়ালে ষড়যন্ত্র দেখছেন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে কারা লাভবান হবে তা ভাবার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হলে ফ্যাসিস্টরা সুযোগ পাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এই পদ্ধতি নিয়ে কথা বলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপনও। তিনি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাওয়া দলগুলোর ব্যাপারে মন্তব্য করে বলেন, তাদের মাথায় কী আছে আল্লাহ জানেন। তারা পুরো পরিস্থিতি নিয়ে হ-য-ব-র-ল করার তালে আছে। তারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে ষড়যন্ত্র করছে। কারণ, অনেক রাজনৈতিক দলের ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার লোক নেই। নির্বাচন বিলম্বিত হলে গণতন্ত্র সংকটের মধ্যে পড়ে যাবে। বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতার শঙ্কার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

এছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নির্বাচন ব্যাহত করতে অনেকেই কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি দলের নেতাকর্মীদের দীর্ঘ সংগ্রামের কথা বর্ণনা করে তাদের কোনো নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দেয়নি বলে মন্তব্য করেন।

বিএনপির এই নেতা জামায়াতকে ইঙ্গিত করে বলেন, রাজনৈতিক বন্ধুত্ব ভুলে গিয়ে একটি দল বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলবে, এটা আমরা আশা করি না।

এদিকে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি চীন সফর করেছে। সেই সফরে তাদের প্রাপ্তি নিয়ে কথা বলেন মহাসচিব। তিনি জানান, নতুন নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চীন মুখিয়ে আছে। সফরে এক চীন নীতির প্রতি বিএনপির দৃঢ় অবস্থানের কথা জানানো হয়েছে। তিস্তা নিয়ে দেশের প্রয়োজন জানানোর পর চীন ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে এবং এ নিয়ে দেশটি প্রস্তাব দিলে ভবিষ্যতে ইতিবাচকভাবে দেখার কথা জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে মিয়ানমারকে রাজি করানোর চেষ্টা চীন করছে বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে, দেশের আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ব্যাগেই যদি অস্ত্র রাখতে হয় তাহলে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

দেশের বর্তমান অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলো বেশ অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা।

 

সৌজন্যে : জাগোনিউজ

কা/আ 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত