মুন্সিগঞ্জে সাংবাদিক রাহিদ হোসেনের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:১৭ | আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২১:০৩

ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের চিত্রগ্রাহক ও নিউজ সেভেন টিভির এডিটর রাহিদ হোসেনের ওপর নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে মুন্সিগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশ নেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি গুলজার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সুজন হায়দার জনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রাজিবুল হাসান জুয়েল, এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি ও দৈনিক মুন্সিগঞ্জের সময় পত্রিকার সম্পাদক মাইনউদ্দিন সুমন, দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মো. জসিম উদ্দিন, খবরপত্র পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মো. হুমায়ুন, যমুনা টিভির জেলা প্রতিনিধি আরাফাত রায়হান সাকিব, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি শুভ ঘোষ, ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি জিতু রায়, দৈনিক বাংলা বাজার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি নাজির হোসেন, দৈনিক ভোরের কাগজের জেলা প্রতিনিধি তোফাজ্জল হোসেন শিহাব, নিউজ সেভেন্টি ওয়ান ডট টিভির সম্পাদক ও মুন্সিগঞ্জ জেলা অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল হোসেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ঢালী, সাংস্কৃতিক কর্মী মরিয়ম আক্তার আয়েশা, রাহিদের বাবা মোহাম্মদ আলী ও মা তাসলিমা বেগমসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, “একজন পেশাদার সংবাদকর্মীর ওপর এভাবে প্রকাশ্যে হামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন আঘাত। প্রকাশ্যে এমন হামলা সাংবাদিক সমাজের জন্য চরম অশনিসংকেত। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার না হলে ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।”
তারা আরও বলেন, “সাংবাদিক রাহিদ হোসেনের ওপর হামলার সাত দিন পার হলেও এখনো কোনো হামলাকারীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার না হওয়া দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। বরং প্রভাবশালী একটি মহল রাহিদ হোসেনকে হয়রানি করার জন্য আদালতে তার নামেই মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এতে পুনরায় হামলার আশঙ্কায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।”
বক্তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। তারা হুঁশিয়ারি দেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে সাংবাদিক সমাজ আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিকেল ৩টার দিকে মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের রমজান বেগ পূর্বপাড়া এলাকায় পারিবারিক বিরোধের জেরে সাংবাদিক রাহিদ হোসেনের ওপর ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ।
জানা যায়, রাহিদের ছোট মামার স্ত্রী সূচনা আক্তারের পরকীয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। এর আগে কয়েকবার এলাকাবাসীর সালিশে সমঝোতা হলেও শেষ পর্যন্ত বিরোধের অবসান হয়নি। ঘটনার দিন সকালে সূচনা আক্তার তার শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে বাবার বাড়িতে খবর পাঠান। এরপর সূচনার স্বজনরা এসে প্রতিশোধ নিতে রাহিদের বড় মামা মোহাম্মদ আল-আমিন কাজীর কাচারির ফলের দোকানে ভাঙচুর চালায় এবং টাকা ছিনতাই করে। পরে রাহিদ মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে যে তার মামার বাড়িতে স্বজনদের ওপর পুনরায় হামলা হয়েছে এবং আহতদের হাসপাতালে নিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তখন রাহিদ আহত স্বজনদের হাসপাতালে আনার জন্য রওনা দেন। কিন্তু পথে যাওয়ার আগেই সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা চালায়। এতে রাহিদ, তার ভাই রাকিব আহত হন।হামলাকারীরা রাহিদের ব্যবহৃত ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় রাহিদের মামা মোহাম্মদ আল-আমিন কাজী বাদী হয়ে স্বাধীন, ইমন, রাজু, হালিম, ফয়েজ কাজী, সেলিম ও সূচনা আক্তারসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত