মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচীর আওতায় পঞ্চগড়ে ৬০২ জন অন্তঃসত্ত্বা নারীর টাকা উধাও

প্রকাশ: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:১১ | আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:২৮

মা ও শিশুর পুষ্টি ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার প্রয়াসে সরকার সহায়তা কর্মসূচীর আওতায় অন্তঃসত্বা দরিদ্রনারীদের জন্য মাসিক ভাতা দিয়ে আসছেন।কিন্তু পঞ্চগড়ে এই মা শিশু সহায়তা কর্মসূচীর আওতাধীন অর্ন্তভূক্ত ৬০২ জন অন্তঃস্বত্বা নারী এক বছর যাবত এক টাকাও পাননি।এমন অভিযোগের সূত্র ধরে জানা যায়, ব্যাংকিং পদ্ধতির অপব্যবহার পরিচালনার মাধ্যমে একটি চক্র এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।ফলে অসহায় হতাশায় পড়েছে পরিবারের এসকল ভূক্তভোগিরা।
এঘটনায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৫৭৭ জন, বোদা উপজেলার ২২ জন এবং দেবীগঞ্জ উপজেলার ৩ অন্তঃসত্ত্বা নারী প্রতারিত হয়েছেন বলে জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। জানা যায় সরকারী নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি মাসে একজন অন্তঃসত্ত্বা ৮০০ টাকা ভাতা পাওয়ার কথা। অথচ দীর্ঘ অতিবাহিত হওয়ার পরেও ওই নারীরা টাকা পাননি।এছাড়া অনেকে একবার ভাতা পেলেও পরে আর পাননি। অথচ সরকারি নথিপত্রে দেখা গেছে, তাদের নামেই টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
চক্রটি অভিনবপন্থায় প্রতারণার মাধ্যমে ভাতাভোগীদের মোবাইল নম্বর বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে হস্তক্ষেপ করে চক্রটি বিকাশ/নগদ/রকেটের মাধ্যমে টাকা তুলে নিয়েছে। আর এর ফলে ভুক্তভোগীরা কিছু না জেনেই বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের প্রাপ্য অর্থ পাওনা থেকে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের সর্দারপাড়া এলাকার ফাতেমা বানু বলেন, ‘কার্ড হওয়ার পর একবার টাকা পেয়েছিলাম, এরপর আর পাইনি। পরে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরে গিয়ে জানতে পারি, আমার নামে অন্য কেউ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা তুলেছে। আমরা তো গরিব মানুষ, এই টাকাটা অনেক বড় সহায়তা ছিল। এখন চাই দোষীরা যেন শাস্তি পায়।’
একই অভিযোগ করেন শিউলি আক্তার নামে আরেক ভুক্তভোগী। তিনি বলেন, ‘আমরা ভাতার টাকা পাচ্ছি না। কারা যেন আমাদের নাম ব্যবহার করে টাকা তুলেছে। সরকার যেন আমাদের টাকা ফিরিয়ে দেয় এবং দোষীদের শাস্তি দেয়, এটাই আমাদের দাবী।’
সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, ‘যাদের ভাতা পাওয়ার কথা, তারা অভিযোগ করছেন, টাকা পাচ্ছেন না। তবে বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেছি। কমবেশী প্রতিটি ইউনিয়নে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে।’ যা অনাকাঙ্খিত বিষয়। এ টাকা গরীব অসহায় নারীদের।’
জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ঢাকা অফিস থেকেও এ বিষয়গুলো নিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ওই নারীদের তালিকা তৈরী করে তৈরি করে তাদের মোবাইল নম্বর ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংশোধনের কাজ শুরু করেছি। আশা করছি এটির সমাধান হবে। আগামীতে যেনো এমন ঘটনা আর না হয় সে জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত