পশ্চিমা অস্ত্র রাশিয়ায় আঘাত হানলে পরিণতি হবে গুরুতর : পুতিন
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৪, ১১:২০ | আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩০
ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান চলছে টানা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে। রুশ এই আগ্রাসনের শুরু থেকেই ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। ইউক্রেনীয় বাহিনী পশ্চিমাদের দেওয়া বিভিন্ন অস্ত্র রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। ইউক্রেন অবশ্য এসব অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভেতরেও হামলা চালাতে চায়। এমন অবস্থায় কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তিনি বলেছেন, পশ্চিমা অস্ত্র রাশিয়ায় আঘাত হানলে তার পরিণতি হবে গুরুতর। বুধবার (২৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিয়েভের চাওয়া অনুযায়ী পশ্চিমা দেশগুলো যদি ইউক্রেনকে রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে হামলার করতে তাদের অস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দেয় তাহলে তার ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে মঙ্গলবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এর আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, রাশিয়ান সামরিক ঘাঁটিগুলোকে ‘অকার্যকর’ করতে ইউক্রেনকে অনুমতি দেওয়া উচিত। মূলত এসব ঘাঁটি থেকেই রুশ সৈন্যরা ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে। এছাড়া বিশ্বকে যুদ্ধে ক্লান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এএফপি বলছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করলেন যখন সামরিক জোট ন্যাটোর কিছু সদস্য দেশের পাশাপাশি জোটের প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালানোর জন্য পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
উজবেকিস্তান সফরকালে পুতিন বলেন, ‘সংঘাতের এই ক্রমাগত বৃদ্ধি গুরুতর পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। ইউরোপে, বিশেষত ছোট দেশগুলোতে, তারা কী নিয়ে খেলছে সে সম্পর্কে তাদের সচেতন হওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, এমন অনেক ইউরোপীয় দেশ রয়েছে যারা ‘আয়তনে ছোট’ এবং সেসব দেশের ‘ঘনবসতিপূর্ণ জনসংখ্যা’ রয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে আঘাত করার কথা বলার আগে এই বাস্তবতাটি তাদের মনে রাখা উচিত, এটি গুরুতর বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের বাহিনী হামলা চালালেও তার দায়ভার পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহকারীদের ওপরই বর্তাবে।’
প্রেসিডেন্ট পুতিন আরও বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন পশ্চিমা সামরিক প্রশিক্ষকরা ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে ভাড়াটে হিসাবে গোপনে কাজ করছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সেনাদের ইউক্রেনে পাঠানোর কোনও পদক্ষেপ নিলে তা সংঘাতের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেবে এবং ইউরোপকে গুরুতর সংঘাতের দিকে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেটি হবে বৈশ্বিক সংঘাতের দিকেও আরেকটি পদক্ষেপ।
ইউক্রেনের শীর্ষ কমান্ডার গত সোমবার ঘোষণা করেছেন, তার দেশে সামরিক প্রশিক্ষক পাঠানোর বিষয়ে ফ্রান্সের সাথে আলোচনা চলছে। পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেনের ভূখণ্ডে যারাই থাকুক না কেন আমরা যা প্রয়োজন মনে করব সেটিই করব’।
এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল ব্রাসেলসে ইইউ প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকের পর বলেন, ইউক্রেনে সামরিক প্রশিক্ষক পাঠানোর বিষয়ে ইউরোপীয় দেশগুলো বিভক্ত। এছাড়া জার্মানিসহ অন্য দেশগুলোও এমন পদক্ষেপ নেওয়ার বিরোধিতা করছে যার ফলে তাদেরকে পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাশিয়ার সাথে সরাসরি সংঘর্ষের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। উল্লেখ্য, ইইউ দেশগুলো ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্লক-ওয়াইড মিশনের অধীনে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেনের বাইরে ৫০ হাজার ইউক্রেনীয় সেনাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত