চোরও ৯৯৯-এ কল করে সহযোগিতা চাচ্ছে: আইজিপি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:৩০ |  আপডেট  : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৫

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন [ফাইল ছবি]

পর্যটকদের সেবা ও নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ ব্যাপক কাজ করছে দাবি করে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, বিভিন্ন আঙ্গিকে ট্যুরিস্ট পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশকে দেখলে এখন স্বস্তিবোধ করেন পর্যটকরা। রাত ১০টার সময় এখন আর হোটেলে পর্যটকদের ঢুকতে বাধ্য করা হয় না, পরিবর্তন এসেছে।

তিনি বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তবে অনেক বেশি এগিয়ে যাওয়া দরকার। যে কেউ ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ সেবা দিচ্ছে। চোরও ধরা পড়ার পর মারধর থেকে রক্ষা পেতে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চাচ্ছে। সাগরে আটকেপড়া জেলেরাও ফোন করে সহযোগিতা নিচ্ছে। যেভাবে বিকশিত হওয়া দরকার, প্রত্যাশার সঙ্গে আমাদের সক্ষমতা ও সেবার মান বাড়ানোর চেষ্টা করছি।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান। সভাপতিত্বে করেন ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান।

পুলিশপ্রধান বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশ গঠনের পর জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান ২০১৩ সালে ছিল ২ দশমিক ৯ শতাংশ। সেখানে এখন ২০২১ সালে তা ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না, আমরা ট্যুরিস্ট পুলিশকে আরও গতিশীল ও সেবার মান বাড়াতে উদ্যোগ নিচ্ছি।

আইজিপি বলেন, ৩০ বছর আগে যখন কক্সবাজার গিয়েছিলাম তখন রাতের বেলা বাইরে বেরোতে দিতো না। ডিআইজি থাকাকালীন কক্সবাজার গিয়ে দেখি রাত আড়াইটা তিনটা পর্যন্ত বিচে মানুষ। ট্যুরিস্ট পুলিশের নিরাপত্তায় পর্যটকরা রাতেও বিচে ঘুরছেন।

তিনি বলেন, ২০১৫ পর্যটন খাতে কর্মসংস্থান ছিল ১৭ লাখ, ২০২২ সালে হয়েছে তা ৪০ লাখ। পর্যটন থেকে রাজস্ব খাতে আয় ২০১৩ সালে ছিল ৬১৩ কোটি টাকা, ২০২১ সালের তথ্যানুযায়ী হয়েছে ২২৭৯ কোটি টাকা।

ভ্রমণ পর্যটনে বৈশ্বিকভাবে বাংলাদেশ ২০১৭ সালে ১২৩তম অবস্থানে ছিল। সেখানে এখন হয়েছে ১০০তম দেশ। আমাদের অবস্থান এগিয়েছে। ২০১৭ সালে বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ভ্রমণ করেছে এক কোটি ৩৬ লাখ দেশি পর্যটক, ২০২২ সালে তা হয়েছে ৪ কোটি ২৫ লাখ। বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছে ১ লাখ ৩৭ লাখ ২০১৭ সালে। ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত তা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার। এতেই প্রমাণ করে আমাদের পর্যটন খাত এগিয়ে যাচ্ছে।

পুলিশকে আরও ট্যুরিস্টবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। কারণ বাংলাদেশের পর্যটন খাত বিকশিত হচ্ছে। যে কারণে ট্যুরিস্ট পুলিশের ওপর দায়িত্ব ও প্রত্যাশাও বাড়ছে।

আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তবে অনেক বেশি এগিয়ে যাওয়া দরকার। যে কেউ ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ সেবা দিচ্ছে। চোরও ধরা পড়ার পর মারধর থেকে রক্ষা পেতে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চাচ্ছে। সাগরে আটকেপড়া জেলেরাও ফোন করে সহযোগিতা নিচ্ছে। যেভাবে বিকশিত হওয়া দরকার, প্রত্যাশার সঙ্গে আমাদের সক্ষমতা ও সেবার মান বাড়ানোর চেষ্টা করছি।

সেমিনারে পর্যটন শিল্পের বাণিজ্য সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি শিবলুল আলম করিম বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে ট্যুরিজম সেক্টরে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। ক্রাইম না বাড়ে সে বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশকে কাজ করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার দেব বলেন, সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি একটি দেশের পর্যটনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তি, সফটওয়্যার ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করা যায়। বিভিন্ন দেশে চালু হয়েছে। আমাদের দেশেও স্মার্ট সিকিউরিটি সেবাদান করা সম্ভব। টেকনোলজি বেস ট্যুরিস্ট পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের গভর্নিং বডির সদস্য মনোয়ারা হাকিম আলী বলেন, সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পর্যটকদের আস্থা অর্জন করতে পারলে এ সেক্টরে আরও সম্ভাবনা বাড়বে।

সৌজন্যে : jagonews24

কা/আ

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত