গুলশান শপিং সেন্টার গুড়িয়ে দেওয়ার আদেশ বহাল রেখেছে - হাইকোর্ট

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৫০ |  আপডেট  : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৬

রাজধানীর গুলশান-১ এ অবস্থিত ‘গুলশান শপিং সেন্টার’ ৩০ দিনের মধ্যে গুড়িয়ে দিতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। সোমবার (২২ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবাদুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশান-১ এ অবস্থিত ‘গুলশান শপিং সেন্টার’ ৩০ দিনের মধ্যে গুড়িয়ে দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ডিএনসিসি, রাজউকসহ সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী। রাজউকের পক্ষে ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় উপস্থিত ছিলেন।

অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত জুলাইয়ে রাজধানীর গুলশান-১ এ অবস্থিত ‘গুলশান শপিং সেন্টার’ ভেঙে ফেলার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্ট রিট করেন বানী চিত্র ও চলচ্চিত্র নামে দুটি কোম্পানি। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। রুলের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গুলশান শপিং সেন্টার ৩০ দিনের মধ্যে গুড়িয়ে দিতে নির্দেশ দেন। 

গত ২৩ জুলাই রাজধানীর গুলশান-১ এ অবস্থিত ‘গুলশান শপিং সেন্টার’টি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সিলগালা করে দেয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। ‘গুলশান শপিং সেন্টার’-এর হোটেল, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান। ‘গুলশান শপিং সেন্টার’-এর জরাজীর্ণ ভবন ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকার কারণে ২০২১ সালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর মার্কেটটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ডিএনসিসিকে জরুরি ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেয়। কিন্তু সিলগালা ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেছে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। ১৩ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-৩ এর কর্মকর্তারা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি সিলগালা করতে যাওয়ার পর এ ঘটনা ঘটে।

অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ন বলেন, শপিং সেন্টারটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যেকোনো ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে দোকান মালিকদের ভবন খালি করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা সেটি করেনি। ঝুঁকিপূর্ণ-পরিত্যক্ত এই ভবন ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, বারবার সতর্ক করা হলেও ব্যবসায়ীরা পরিত্যক্ত ভবনটি খালি করছেন না। খালি করার জন্য একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তারা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ব্যবসা পরিচালনা করে চলেছেন। জানমালের নিরাপত্তার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সুপারিশ বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯, তৃতীয় তফসিল-১৭, ইমারত নিয়ন্ত্রণ ইমারত সম্পর্কিত প্রবিধানের ১৭.১ ও ১৭.২ অনুযায়ী জনস্বার্থে ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটটি সিলগালা করা হয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ও নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ প্লাটুন পুলিশ, ১ প্লাটুন এপিবিএন ও অন্যান্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ উপস্থিত হয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মার্কেটটির গেটগুলো তালাবদ্ধ ও সিলগালা করা হয়। এসময় মাইকিং করা হয় ও মালামাল সরানোর জন্য নিদের্শনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, গ্যাস ও অন্যান্য সেবা সংস্থার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত