ইসলামপুরে ”লোম মানব” পরিবারের দু:খকষ্ট

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৪৭ | আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ২৩:৫১

জামালপুর জেলার ইসলামপুর পৌরসভার ফকিরপাড়া গ্রামে বসবাস করছেন এমন এক অদ্ভুত পরিবার। হত দরিদ্র পরিবারটির প্রতিটি সদস্যের সারা শরীরজুড়ে অস্বাভাবিক ঘন লোম। এই বিরল শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কারণে তাদেরকে স্থানীয়রা লোম মানব পরিবার বা দাঁড়িওয়ালা মানব বলে ডাকে। পরিবারের মেয়ে ছেলে উভয়ের শরীরেই রয়েছে অস্বাভাবিক লোম। যা তাদের দৈনন্দিন জীবনের ওপর প্রভাব ফেলছে। মানবেতর জীবনযাপন যেন তাদের নিত্যসঙ্গী। সমাজের কৌতূহল আর কটূকথার আঘাতে তারা আজও সাধারণ জীবনের স্বপ্ন দেখতে পারেন না। তাই সামাজিক ও সরকারি সহায়তা চায় পরিবারটি।
পরিবারটির সদস্য সংখ্যা ১২ প্রত্যেকের গায়ে অস্বাভাবিক লোম, এই লোমের কারনে তারা রয়েছে সমাজ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। স্থানীয় কারোর কাছে তারা ভয়ের কারণ, আবার কেউবা করেন হাসি তামশা। পরিবারটির অভিযোগ সমাজের কেউ মিশতে চায় না তাদের সাথে, দরিদ্র অসহায় পরিবারটির সহায়তা এখন পযন্ত এগিয়ে আসেনি কোন সামাজিক সংগঠন ও সরকারি দপ্তর। তারা দীর্ঘদিন ধরেই এই বিশেষ শারীরিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে জীবনযাপন করছে। পরিবারের সদস্যরা জানান, জন্মের পর থেকেই তাদের শরীরে অস্বাভাবিক লোম গজাতে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লোম আরও ঘন হয়ে যায়।
পরিবারের নারী সদস্য শিরিনা আক্তার নিরপেক্ষ কে বলেন, তার বিয়ে হয়েছিলো, তার স্বামীর তাকে দেখেন অবহেলার চোঁখে স্বামীর বাড়ির আত্মীয়রা কেউ তাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে চায় না, তাই বাধ্য হয়ে গরীব বাবার ঘরেই রয়েছেন কষ্টে করে।পরিবারের আরেক সদস্য ভোলা হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বাইরে কোন কাজে গেলে সবাই তাদেরকে এড়িয়ে চলে, অনেক সময় পাশে দাঁড়াতে পর্যন্ত দেয় না। ইসলামপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার জুলহাস মন্ডল বলেন, পরিবারটিতে অভাব অনটন সব সময় লেগে থাকে, তাদের সামাজিক ও আর্থিক সহায়তায় সমাজের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। দারিদ্র্য ও সামাজিক অবহেলায় জর্জরিত এই পরিবারটি এখন মানবিক সহায়তার প্রত্যাশায় দিন গুনছে। স্থানীয় সচেতন মহল ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে তাদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা, এ এ এম আবু তাহের বলেন, এটি হরমন জনিত রোগ যেহেতু বংশ পরম্পরায় হয় তাই বিচলিত হবার কিছু নেই। সমাজের সকলেই যদি তাদের পাশে দাঁড়ায়, তাহলেই হয়তো এই পরিবারও ফিরে পাবে স্বাভাবিক জীবনের আলো।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত