নিপীড়ন মূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি

অবন্তিকা ও অংকনের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোগত হত্যার প্রতিবাদ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৪, ১৬:০৮ |  আপডেট  : ২২ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৩৯

অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার প্রতিবাদের জের ধরেই আবার সামনে উঠে এলো অঙ্কন আত্মহত্যার বিচারের দাবী, সাথেই উঠে আসে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘যৌন হয়রানির বিচার চাই’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েও বিচার না পাওয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ফেসবুক আইডিতে পোস্টে আত্মহত্যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠীকে দায়ী করেন আত্মহত্যা করেন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। দীর্ঘ সেই পোস্টে তিনি বারবার উল্লেখ করেছেন কীভাবে তাকে ক্রমাগত হুমকির মুখে রাখা হয়েছে। সহপাঠীর যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় অনলাইনে এবং বাস্তবে প্রতিনিয়ত তাঁকে হয়রানি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। অবন্তিকার অভিযোগ, একজন সহকারী প্রক্টর অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পর্যায়ের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অভিযুক্ত সহপাঠীর পক্ষ নিয়ে তাঁকে হয়রানি করতে শুরু করেন। অন্তত সাতবার তাকে কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে অবমাননা, অপমান ও হয়রানি করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। কুৎসা রটানোর মাধ্যমে সামাজিকভাবেও তাকে হেয় করা হয়। 

প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ। চার দিন ধরে চলছে এই প্রতিবাদ। ১৮ মার্চ, ভিসি ভবন,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নেয়া হয় ফাইরুজ অবন্তিকা ও অংকনের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোগত হত্যা এবং সকল নিপীড়ন মূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি।

 

অবন্তিকার আত্মহত্যার বিচারের দাবিতে যখন উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঠিক তখন আবারও সামনে এসেছে ২০২১ সালের আরেকটি অভিযোগের কথা, যা এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। অভিযোগকারী বলছেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের নারাজির ভিত্তিতে একাধিকবার তদন্ত কমিটি পরিবর্তন করতে হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি শিক্ষাজীবন থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন, সহপাঠীরা ভয়ে পাশে ছিল না। অভিযোগকারী শিক্ষার্থী ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘যৌন হয়রানির বিচার চাই’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষক, নির্মাতা আবু শাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে। ২০২২ সালে ছবিটি সামনে এলেও ভুক্তভোগীর দাবি অনুযায়ী এই যৌন হয়রানির ঘটনা ২০১৯ সালের এবং তার দুই বছর পরে ২০২১ সালে তিনি অভিযোগ দাখিল করেন। যার ন্যায় বিচার এখনও পায়নি অভিযোগকারী উল্টো প্রতিনিয়ত হেনস্তার শিকার হন।  

 

এই সূত্র ধরে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী অঙ্কন বিশ্বাসের আত্মহত্যাকে 'পরিকল্পিত হত্যা' দাবী আরও একবার জোরদার হয়ে উঠে। 

ভীষন কষ্টে মৃত্যুর পর এটুকু সহযোগীতাও পায়নি ইংরেজি বিভাগের ১২ তম ব্যাচের, অংকন বিশ্বাস। প্রায় ২ বছর আগে 'ফাইরুজ অবন্তিকার' মতই যার অকালে প্রাণ দিতে হয়েছিল। বিষপ্রয়োগের পর, প্রায় ১৫ দিন বিএসএমএমইউর আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর টানাপোড়েন শেষে এই কুৎসিত, বিভৎস দুনিয়াকে বিদায় দিয়েছেন তিনি। ভালোবেসে বিয়ে করে ছিলেন অন্য ধর্মের ছেলেকে। এই ভালোবাসাই কাল হয়ে আসে বলে দাবী তার স্বজনদের। সেই মৃত্যু ছিলো পুরোপুরি রহস্যে ঘেরা, কেউ বলেন তিনি আত্মহনন করেছেন। অপরদিকে, যারা অংকন'দির খুব কাছের তারা বিশ্বাস করেন তাকে খুন করা হয়েছে। এ মৃত্যুর সুহারা, তদন্ত আজও পর্যন্ত হয়নাই। জবি প্রশাসন নামমাত্র এক তদন্ত কমিটি গঠন করে কিন্তু তার কার্যক্রম আর আগায় নি। অংকনের মৃতদেহ তদন্ত ছাড়াই, বিচার ছাড়াই দাহ হয়েছে। 

সকলের দাবী অঙ্কন হত্যার সুস্থ তদন্ত ও বিচার হলে আজ নতুন করে কাউকে প্রাণ দিতে হত না । 

এদিকে ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম এবং সহপাঠী রায়হান আম্মান সিদ্দিকীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন কুমিল্লার আদালত। কুমিল্লা কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ হোসেন জানান, সকাল পৌনে ১১টার দিকে একটি সাদা প্রাইভেটকারে আসামিদের আদালতে হাজির করে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ।  বিস্তারিত > 

 

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত