১৯৭২ সালের এই দিনটি দেশ ও জাতির গৌরবজ্জ্বল দিন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২২, ১৪:৪৪ |  আপডেট  : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৭

তিনি ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়েছিলেন আগেই, সেই ১৯৬৯ সালে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ তাঁকে করেছে বাঙালির ‘অবিসংবাদিত নেতা’। আর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে পান শান্তি পদক জুলিও কুরি। তিনিই জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্বশান্তি পরিষদের প্রেসিডেনশিয়াল কমিটির সভায় ১৪০টি দেশের প্রায় ২০০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সবাই একমত হয়েছিলেন, সারা জীবনের দর্শন আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কত্বের প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি পদক প্রদান করার। সে বিবেচনায় বিশ্বশান্তি পরিষদ ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর পদকপ্রাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে। আর পরের বছর ২৩ মে এশীয় শান্তি সম্মেলনের এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে সেই পদক বঙ্গবন্ধুকে পরিয়ে দেন পরিষদের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল রমেশচন্দ্র। সেই অনুষ্ঠানে রমেশচন্দ্র বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার নন, তিনি বিশ্বের এবং তিনি বিশ্ববন্ধু।’ স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রনেতার সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক পদক লাভ।

বাংলায় এই পদকের নাম ‘জুলিও কুরি’ বলা হলেও এর ফরাসি উচ্চারণ ‘জোলিও ক্যুরি’। ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী জঁ ফ্রেডেরিক জোলিও ক্যুরি ১৯৫৮ সালে মৃত্যুবরণ করলে বিশ্বশান্তি পরিষদ তাদের শান্তি পদকের নাম ১৯৫৯ সাল থেকে রাখে ‘জোলিও ক্যুরি’। ফ্রেডেরিকের মূল নাম ছিল জঁ ফ্রেডেরিক জোলিও। ফ্রেডেরিকের স্ত্রী ইরেন ক্যুরি। তিনিও বিজ্ঞানী। বিয়ের পর ফ্রেডেরিক ও ইরেন উভয়ে উভয়ের পদবি গ্রহণ করেন এবং একজনের নাম হয় জঁ ফ্রেডেরিক জোলিও ক্যুরি এবং অন্যজনের নাম ইরেন জোলিও ক্যুরি। পরে যৌথভাবে তাঁরা নোবেল পুরস্কারও লাভ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রেডেরিক জোলিও ক্যুরি শুধু বিজ্ঞানী হিসেবেই কাজ করেননি, তিনি গেরিলা বাহিনীতে যোগ দিয়ে এবং তাদের জন্য হাতিয়ার তৈরি করেও অবদান রাখেন। তাঁর অবদানের কারণেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরিসমাপ্তি সহজতর হয়। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই যুদ্ধ পরিসমাপ্তি ছিল খুবই জরুরি। তিনি নিজে বিশ্বশান্তি পরিষদের সভাপতিও ছিলেন। বঙ্গবন্ধু এই পদকপ্রাপ্তির আগে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো, ভিয়েতনামের সংগ্রামী নেতা হো চি মিন, চিলির গণ-আন্দোলনের নেতা সালভেদর আলেন্দে, ফিলিস্তিনের জনদরদি নেতা ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ এই পদকপ্রাপ্ত হয়েছেন। মূলত, সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ বিরোধিতা এবং মানবতার ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, তাঁরা এই পদকে ভূষিত হয়ে আসছিলেন ১৯৫০ সাল থেকে।


 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত