হেফাজতের হরতাল চলছে, কঠোর অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২১, ০৮:৫৫ |  আপডেট  : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:১৯

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বাধা এবং সংঘর্ষে কয়েকজন নেতাকর্মী নিহতের প্রতিবাদে  হেফাজতে ইসলামের ডাকে আজ রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।

তবে হরতালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ-র‍্যাবের পাশাপাশি মাঠে রয়েছে বিজিবি সদস্যরা। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থায় থাকতে বলা হয়।

এই হরতালকে কেন্দ্র করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত সদস্যদের কঠোর অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।

শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতর থেকে এ সংক্রান্ত বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও পুলিশ সদর দফতরের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

নির্দেশনায় চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের ওপর হামলার আশঙ্কায় ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থানেও থাকতে বলা হয়।

সূত্র জানায়, হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিতের লক্ষ্যে পুলিশ ও র‌্যাব সদর দফতরে পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও সদস্যদের নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি দেশের জানমাল, রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় কঠোর অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, যারা এই হরতালের নামে বিক্ষোভ, মিছিল সমাবেশের নামে নাশকতার চেষ্টা করবে, জ্বালাও-পোড়াও করবে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। কেউ যদি যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে, জানমালের ক্ষতির চেষ্টা করে, থানায় হামলা বা আগুন দেয়ার চেষ্টা করে তবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে র‌্যাব সদর দফতর সব ব্যাটালিয়নকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি র‌্যাব সাইবার পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। কেউ হরতালের নামে সহিংসতা করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে হরতালের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

এদিকে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে আনুষ্ঠানিক সমর্থন না জানালেও বিষয়টিকে যৌক্তিক বলে আখ্যায়িত করেছে বিএনপি।

অন্যদিকে হেফাজত হরতালের নামে যাতে কোনো নাশকতা ও সহিংসতা চালাতে না পারে, সে জন্য মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

এ ছাড়া হরতালে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

এর আগে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে বিক্ষোভে হাটহাজারীসহ বিভিন্ন স্থানে ‍পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সংগঠনের নেতাকর্মীদের হতাহতের ঘটনায় শনিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং রোববার হরতাল ডাকে হেফাজতে ইসলাম।

এরপর  শুক্রবার ডিএমপি কন্ট্রোল রুম থেকে রাজধানীতে কর্মরত আটটি বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি), অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ও সহকারী পুলিশ কমিশনারদের (এসি) সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, ডিএমপির থানাগুলোয় পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশ বক্সে যেকোনো সময় হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। ডিএমপি ছাড়াও এ সতর্কতা দেয়া হয় সারা দেশের থানাগুলোতেও।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত