বগুড়ায় গোখাদ্যের চরম সঙ্কট

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৪ | আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ২২:০৭

বগুড়ার নন্দীগ্রামে গোখাদ্য খড়ের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে এলাকার ছোট-বড় খামারি ও কৃষকরা। খড়ের অভাবে অনেকেই উপায় না পেয়ে রান্নার কাজে ব্যবহৃত গত বছরের আমন ধানের নাড়া (ধানের গোড়া) এমনকি কাঁচা ধান কেটে সেই খড় গরুকে খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গরুর প্রধান খাদ্য হিসেবে খড়ের চাহিদা সর্বাধিক থাকলেও চলতি আমন মৌসুমে ধান কর্তন শুরু না হওয়ায় পুরোনো খড়ের মজুদ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। ফলে বাজারে খড়ের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি কেজি ৩০ টাকা। ছোট একটি খড়ের বোঝা বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকায়। তবুও চাহিদার তুলনায় খড়ের জোগান খুবই সীমিত। আবার বেশি দাম দিয়েও খড় মিলছে না বলে জানিয়েছেন খামারি ও কৃষকরা। অথচ আমন ধান কাটা-মাড়ায়ের পর দেশের বিভিন্নস্থানের খড় ব্যবসায়ীরা নন্দীগ্রাম উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ খড় ক্রয় করে ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যায়। যেকারণে নন্দীগ্রাম উপজেলায় চাহিদা অনুযায়ী খড়ের মজুদ থাকে না। তাই আগে থেকেই খড় মজুদ রাখার বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার।
নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে খড়ের চরম সঙ্কট। খড়ের অভাবে হতাশ খামারি ও কৃষকরা গরু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। যাদের পরিবারের প্রধান আয়ের উৎস দুই-একটি গরু বা গাভী পালন করা, তারাও এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অনেকেই জানিয়েছে, গরুকে প্রতিদিন পরিমাণ মতো খাদ্য দিতে না পারায় গরুর ওজন কমে যাচ্ছে। সেই সাথে গাভীর দুধ উৎপাদনও হ্রাস পেয়েছে।
খামারি জয়নাল আবেদীন বলেন, আগে এক বোঝা খড় ৬০০-৭০০ টাকায় পাওয়া যেতো। এখন তা দুই হাজার টাকায়ও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। গরুকে খাওয়াবো কী? বাধ্য হয়ে একটা গরু বিক্রি করে দিয়েছি। আরেক খামারি নাজমুল হোসেন জানান, খড় নেই, ঘাসও তেমন নেই। তবুও সবাই মাঠ থেকে ঘাস কেটে এনে গরুকে খাওয়াচ্ছে। আবার কেউ কেউ গরুকে শুধু ভুসি-পানি খাওয়ায়। যা দেখে খুব কষ্ট লাগে। স্থানীয় খামারি ও কৃষকরা আশঙ্কা করছেন, খড়ের এই তীব্র সঙ্কট অব্যাহত থাকলে অনেক ছোট-বড় খামার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে শুধু খামারিরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, দুধ ও মাংস উৎপাদনেও বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা কল্পনা রানী রায় বলছেন, এখন গোখাদ্যে খড়ের সঙ্কট থাকলেও ধান কাটা-মাড়াই শুরু হলে খড়ের আর সঙ্কট থাকবে না। এখন খামারি ও কৃষকদের বিকল্প গোখাদ্য গরুকে খাওনোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত