সহিংসতা: রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি

  রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:৪৯ |  আপডেট  : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:১৪

চট্টগ্রামের দুই পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটি জারি থাকবে বলে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলছে, যেহেতু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে এবং জনগণের জান ও মাল ক্ষতি সাধনের আশঙ্কা রয়েছে। তাই আজ শুক্রবার বেলা ১টা থেকে রাঙামাটি জেলার পৌরসভা এলাকায় এবং বেলা ২টা থেকে খাগড়াছড়ি সদরে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৫৮ মোতাবেক ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।  এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তারা মাঠে আছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’ এ ছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিকেল ৪টায় সর্বজনীন মিটিং রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে খাগড়াছড়ি শহরে পাহাড়ি-বাঙালি উত্তেজনা শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতভর গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও নয়জন। তাদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় চারজনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল (৩০)। জুনান চাকমা ও রুবেলের বাড়ি খাগড়াছড়ি সদরে এবং ধনঞ্জয় চাকমার বাড়ি দীঘিনালায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা। 

স্থানীয়রা জানান, গতকাল রাতে জেলা শহরের নারানখাইয়া, স্বনির্ভর এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়। এসময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে রাতে ১২ জনকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়। 

তবে কাদের মধ্যে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও গোলাগুলির একাধিক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। 

অন্যদিকে, খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাঙ্গামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় জড়িত উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এসময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার সকালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদিবাসী ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপা এলাকায় আসলে তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ও দোকানে হামলা চালায়। খবর পেয়ে বাঙালিরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কিছু দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে শহরে এখনও পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত