রেইনট্রি হোটেলে শিক্ষাথী ধর্ষণ: সাফাতসহ ৫ আসামি খালাস
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২১, ১৫:০৪ | আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৬
রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম কামরুন্নাহারের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
অপর তিন জন হলেন- সাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই রায় পড়া শুরু করেন বিচারক।
গত ২৭ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সিনিয়র আইনজীবী বাসেত মজুমদার মারা যাওয়ায় আদালতের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তাই বিচারক রায় ঘোষণার জন্য আজ ১১ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
তার আগে গত ১২ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক অসুস্থ থাকায় রায় ঘোষণার জন্য ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক ২৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেছিলেন।
গত ৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। একইসঙ্গে জামিনে থাকা সাফাতসহ পাঁচ আসামির জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
২০১৭ সালের ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। ওই বছরের ১৯ জুন একই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
অভিযোগপত্রে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া মামলার অন্য তিন আসামি সাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত অভিযুক্তরা মামলার বাদী, তার বান্ধবী ও বন্ধুকে আটকে রাখে। অস্ত্র দেখিয়ে ভয় প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। বাদী ও তার বান্ধবীকে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ ও তার বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তার মাধ্যমেই ঘটনার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই শিক্ষার্থীর পরিচয় হয়। ওই দুই শিক্ষার্থী সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডে রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তার বান্ধবী জানতেন না যে সেখানে পার্টি হবে। তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে।
সেখানে যাওয়ার পর তারা কাউকে দেখেননি। সেখানে আরও দুই তরুণী ছিলেন। বাদী ও তার বান্ধবী সাফাত ও নাঈমকে ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যেতে দেখেন। এসময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় তারা চলে যেতে চান। এসময় অভিযুক্তরা তাদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেয় এবং তাকে মারধর করেন। ধর্ষণের সময় গাড়িচালককে ভিডিও করতে বলেন সাফাত। বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত