রাজধানীর রাস্তায় আজও যানজট আর ঘরমুখী মানুষের চাপ
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১৩:৪২ | আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮
রাজধানীর রাস্তায় আজ মঙ্গলবারও যানজট। বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনের জট রয়েছে। এর পাশাপাশি অনেককে ঢাকা ছাড়তেও দেখা গেছে। বেশির ভাগ যাত্রী যাচ্ছেন পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকে করে।
ট্রাফিক পুলিশ বলছে, লকডাউনে খেটে খাওয়া মানুষের কাজকর্ম থাকবে না। অনেকের অফিস বন্ধ। তাই অনেকেই ঢাকা ছেড়ে বাড়ি যাচ্ছেন। এ কারণে অন্যান্য সময়ের তুলনায় গত দুই দিনে গাড়ির চাপ বেশি।
গতকাল সোমবারও ঢাকার রাস্তায় যানজট ছিল। ঢাকা থেকে ঘরমুখী মানুষের ভিড়ও ছিল রাস্তায়। আগামীকাল থেকে সারা দেশে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হচ্ছে। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত আগের ঘোষিত লকডাউন চলমান রয়েছে।
ঢাকার মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে সড়কে চিরচেনা যানজট দেখা গেছে। মোহাম্মদপুরের বিআরটিসি ডিপোর সামনে গাড়ির জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন যাত্রীরা। যাত্রীদের লাইন ফুটপাত পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে।
গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী তোলার কথা থাকলেও কিছু গণপরিবহনে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে গেছেন। গাড়ির অভাবে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
চাকরিজীবী ফিরোজ ফাতেমা মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাংলামোটরগামী বাসে ওঠার জন্য ছুটোছুটি করছিলেন। তিনি বলেন, ‘অনেকক্ষণ ধরে দৌড়াচ্ছি। গাড়িতে উঠতে পারছি না।’
মোহাম্মদপুর থেকে গুলশানের অফিসে যাতায়াত করেন মোস্তফা সারোয়ার। তিনি জানান, ‘অফিসে যেতে গত দুই দিনের মতো এত ঝামেলা লকডাউনের আগের দিনগুলোয় পেতে হয়নি।’
মোস্তফা সারোয়ার আরও বলেন, ‘২০ মিনিট ধরে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। গাড়ি আছে, কিন্তু ওঠা যাচ্ছে না। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, বাইকও খালি পাওয়া যাচ্ছে না। দু-একটা পাচ্ছি, কিন্তু ভাড়া অনেক বেশি চাইছে।’
যানজট এবং গণপরিবহনে উঠতে না পারার কারণে অনেকের অফিস বা গন্তব্যে পৌঁছাতেও দেরি হয়।
কারওয়ান বাজারে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা এক ব্যক্তি বলেন, ‘পান্থপথ দিয়ে এসেছি। কারওয়ান বাজারের সিগন্যালে বসে থাকতে থাকতে বিরক্তি লেগে গেছে। বাসা থেকে বের হয়েছিলাম ঠিক সময়েই। কিন্তু সিএনজিতে করে এসেও অফিসে ঢুকতে ৪৫ মিনিট দেরি হয়ে গেছে।’ রাস্তায় যানবাহনের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকেও।
ডিএমপির দায়িত্বরত একজন ট্রাফিক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকার উত্তর-পশ্চিম অংশের গাবতলী পর্যন্ত ডিএমপির এলাকা। কিন্তু ডিএমপির এলাকার বাইরেও গাড়ির চাপ আছে। এ কারণে ডিএমপি থেকে ট্রাফিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবু চাপ সামলানো যাচ্ছে না।
ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘লকডাউনে কাজকর্ম নেই। তাই অনেকে বাড়ি যাচ্ছেন। বৈশাখ ও ঈদের কেনাকাটার বিষয়টিও আছে। সব মিলিয়ে স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও দুদিন ধরে চাপ বেশি।’
এদিকে করোনা নিয়ন্ত্রণে বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে সর্বাত্মক লকডাউন এবং রোজাকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সকাল থেকে পদ্মা পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ ঘাট এলাকায় ভিড় জমাচ্ছে। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা তৈরি হয়েছে।
বিআইডাব্লিউটিসি শিমুলিয়াঘাট সূত্র জানায়, পারাপারের জন্য ঘাটে অপেক্ষা করেছে সহস্রাধিক যানবাহন। এসব যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে বর্তমানে ১৫টি ফেরি ব্যবহার করা হচ্ছে।
গণপরিবহন বন্ধ থাকার নির্দেশনায় লঞ্চও বন্ধ রয়েছে। ফলে বাড়তি চাপ পড়েছে ফেরিতে। আর নিয়ম অমান্য করে কর্তৃপক্ষের সামনেই চলছে স্পিডবোট। এসব নৌযানে যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট, স্বাস্থ্যবিধি কোনটই মানা হচ্ছে না। নেয়া হচ্ছে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া। এছাড়া হাজার-হাজার যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন।
বিআইডাব্লিউটিসি শিমুলিয়াঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, লঞ্চ বন্ধে ফেরিতে যাত্রীর বেশি চাপ পড়েছে। যাত্রীদের সচেতন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত