মোরেলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স রেশমা খাতুন’র বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করার অভিযোগ

  স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২২, ১৪:৩৬ |  আপডেট  : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:৪৯

বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ কর্মরত এক নার্সের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন ও প্রতারনা করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি একজন ভুক্তভোগী ১৩টি দপ্তরে লিখিত অভিযোগে এসব তথ্য উপস্থাপন করেছেন। রিয়াজ রহমান নামক ব্যক্তি তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত সিনিয়র সহকারী নার্স রেশমা খাতুন পিএমআইএস ও পুলিশ ভেরিফিকেশনের মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি নম্বর ৮০.০০.০০০০,৩০১, ৭৩,০০১,২০২০-৩২ এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের ২৬.১০.২১ তারিখে ১১২৪৫৩.২০২১-১২৪ নং পত্রের সুপারিশ ক্রমে এবং স্বা: অধি:/হাস:/মে: বোর্ড/সিনিয়র স্টাফ নার্স ২০২১/২৫৬৮ নং স্মারকের সুপারিশক্রমে রেশমা খাতুন ক্রমিক নং ২৯২৭, রেজি নং-০১৪৪৪৯ মোতাবেক নিয়োগ পেয়েছেন। সরকারি চাকুরির বিধিমালা অনুযায়ি যে সকল কাগজ হাতে লিখে পুরন করতে হয় তারমধ্যে পিএমআইএস ও পুলিশ ভেরিফিকেশন ও ৩শত টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে যৌতুক দিবো না- যৌতুক নিবো না অঙ্গিকারনামা জমা দিতে হয়। পিএমআইএস ও পুলিশ ভেরিফিকেশনে বৈবাহিক অবস্থার তথ্য গোপন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার পিলজঙ্গ গ্রামের সরদার গিয়াস উদ্দীন ও ফরিদা বেগমের কন্যা রেশমা খাতুন পিএমআইএস ও পুলিশ ভেরিফিকেশনে বৈবাহিক অবস্থা অবিবাহিত উল্লেখ করলেও তার বহুবিয়ের প্রমানপত্র পাওয়া গেছে।২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর রিয়াজ নাম ব্যক্তিকে বিয়ে করে। বিয়ের পর বিভিন্নভাবে রিয়াজকে ফাঁদে ফেলে ১৫লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর তালাক দেন রিয়াজকে। রিয়াজকে তালাক দিয়ে ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল সাদ্দাম হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করে। সেখানেও সংসার করতে পারেনি। তালাক দিয়ে সাদ্দামের কাছ থেকে দেনমোহরের টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি পুনরায় প্রথম স্বামী রিয়াজকে আবারো বিয়ে করে রেশমা।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য এর ইনচার্জ শর্মি রায় বলেন, তথ্য গোপন করার কোন অভিযোগ আমরা পাইনি; পেলে নিয়ম মাফিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সরকারি চাকুরীতে বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখার ব্যাপারে বাগেরহাট সিভিল সার্জন জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, কেউ তথ্য গোপন করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

রেশমা খাতুন বলেন, আমি যে সময় চাকুরী পেয়েছি সে সময় আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে। তাই নিজেকে অবিবাহিত লিখেছি। বোঝার ভুল ছিলো বলে ডির্ভোসি লিখিনি। রিয়াজ রহমানের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বিকার করে বলেন, প্রথমে রিয়াজের সাথে পরে সাদ্দাম নামক ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়। সাদ্দামের কাছ থেকে দেনমোহরের টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন রেশমা। সাদ্দামের সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরে আবারো রিয়াজের সাথে বিয়ে হয়েছিলো এবং সেখানেও পরবর্তীতে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে বলে তিনি জানান। তবে রেশমা খাতুন সর্বশেষ রিয়াজের সাথে ডিভোর্স’র কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এদিকে রেশমার স্বামী রিয়াজ রহমান বলেন, রেশমা তার স্ত্রী; কিন্তু প্রতারক প্রকৃতির মেয়ে তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তথ্য গোপন করে নিজেকে অবিবাহিত উল্লেখ করে চাকুরীতে যোগদান করেছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত