মৃত্যুর পর যাকে নিয়ে এত আলোচনা
![](https://gramnagarbarta.com/public/assets/images/reporter.png)
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৩, ১২:৪৯ | আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৪, ১৬:১০
![](https://gramnagarbarta.com/storage/photos/1/642530724155c.jpg)
ছবি দেখে হয়তো কারো বুঝার বাকি নেই কাকে নিয়ে লেখা হচ্ছে। তবে জীবিতকালে তার এতটা খ্যাতি ও ভালবাসা পাননি ছিলনা যতটা বর্তমানে তার শিল্পকর্ম নিয়ে আলোচনা হয়। খুবই করুণ অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর কয়েক বছর আগে থেকেই তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ছোট একটি ক্ষুর দিয়ে তিনি নিজের কান কেটে ফেলেন। এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন রকম কারণ আলোচনায় এসেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত গুজবটি হল, 'আপন ভাই থিও’র বিয়ের খবর শুনেই কান কেটেছিলেন হতাশ ভ্যান গঘ'। তাছাড়া আর্থিক কষ্টসহ সামাজিক অবহেলার কারণে মানসিকভাবে বেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন গুণী এই শিল্পী। এই ঘটনার প্রায় দুই বছর পর জীবনের প্রতি প্রবল হতাশায় ভুগে রিভলভার দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। কোনো সাক্ষী ছিল না এবং তিনি ঘটনার ৩০ ঘণ্টা পরে মারা যান। বুলেটটি গেঁথে ছিলো পাঁজরে এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলির মধ্যে কোনো ক্ষতি না করেই তার বুকের মধ্যে দিয়ে গেছে - সম্ভবত তাঁর মেরুদণ্ড গিয়ে আটকে গিয়েছিলো। তিনি আবার্গ রাভাক্স হাসপাতালে হেটে গিয়েছিলেন, সেখানে দুইজন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু সার্জন উপস্থিত না থাকলে বুলেটটি অপসারণ করা যায়নি। পরেরদিন তার ভাই থিও হাসপাতালে এসে উনাকে দেখে খুশি হন। কিন্তু ভ্যান গখের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। ২৯ জুলাই সকালে তিনি মারা যান।
![](https://gramnagarbarta.com/storage/photos/1/64252cae6374e.jpg)
ভিনসেন্ট উইলিয়াম ভ্যান গখ একজন প্রধান উত্তর-অন্তর্মুদ্রাবাদী ওলন্দাজ চিত্রশিল্পী। রুক্ষ সৌন্দর্যের এবং আবেগময় সততার প্রকাশ, সপ্রতিভ রং এর ব্যবহারের কারণে তার কাজ বিখ্যাত ছিল যা বিংশ শতাব্দীর শিল্পকলায় সুদূরপ্রসারি প্রভাব রেখেছিলো। তিনি ছোট বয়স থেকেই আঁকাআঁকি শুরু করেন। কিন্তু মধ্য বিশের পরে তিনি চিত্রকর্ম আঁকা শুরু করেন অসংখ্য বিখ্যাত চিত্রকর্ম তার জীবনের শেষ দুই বছরে আঁকা। প্রতিকৃতি, প্রাকৃতিক দৃশ্য, সূর্যমুখী ফুল, গমের ক্ষেত ইত্যাদি তার আঁকার বিষয়বস্তুর মধ্যে ছিল। মাত্র এক দশকে তিনি ২,১০০-এর বেশি চিত্রকর্ম আঁকেন, যার মাঝে ৮৬০টি তৈলচিত্র এবং ১,৩০০-এর বেশি জল রং, অঙ্কন, নকশা এবং চিত্র ছিলো।
![](https://gramnagarbarta.com/storage/photos/1/64252e0a6eda2.jpg)
![](https://gramnagarbarta.com/storage/photos/1/64252e6a1a878.jpg)
ভ্যান গখ খুব ছোটবেলা থেকেই চিত্রকলা বিষয়ে খুব আগ্রহী ছিলেন। গখ শিল্পকলার ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি হেগ, লন্ডন ও প্যারিসে ভ্রমণ করেন এবং পরে তিনি ইংল্যান্ডের আইসওর্থ ও রামসগেটে পড়ান। তিনি এই বয়সে অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন এবং একজন যাজক হতে চেয়েছিলেন। ১৮৭৯ সাল থেকে তিনি বেলজিয়ামের একটি খনির অঞ্চলে একজন ধর্মপ্রচারক হিসেবে কাজ করেন যেখানে তিনি স্থানীয় সম্প্রদায়ের মানুষের স্কেচ করতে শুরু করেন। ১৮৮৫ সালে তিনি তার প্রথম প্রধান কাজ আলু খাদক আঁকেন। তার তখনকার কাজগুলো প্রধানত গুরুগম্ভীর ছিলো এবং কোনো প্রগাঢ় রঙের চিহ্ন ছিলো না যা তার পরবর্তী কাজগুলো থেকে আলাদা।
![](https://gramnagarbarta.com/storage/photos/1/64252d151c016.jpg)
১৮৮৬ সালের মার্চে, তিনি প্যারিসে আসেন এবং থিওর সাথে কথা বলেছিলেন মন্টমার্টে লাভল অ্যাপার্টমেন্ট এবং ফার্নানড কর্মনের স্টুডিওতে পড়াশোনা নিয়ে। জুনের মধ্যে তার ভাই থিও বড় একটি ফ্লাট নেন। ফরাসি ইমপ্রেশনিজ্মবাদীদের আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে, তিনি দক্ষিণ ফ্রান্সে যান এবং তিনি সেখানকার প্রবল সূর্যরশ্মির দ্বারা প্রভাবিত হন। তার আঁকা ছবিগুলোতে উজ্জ্বল রঙ বৃদ্ধি পায় এবং তিনি এক অনন্য এবং অত্যন্ত স্বীকৃত শৈলী বিকশিত করেন যা ১৮৮৮ সালে আর্লেসে থাকার সময় তিনি সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করেন। বর্তমানে তার শিল্পকর্ম নিলাম করা হলে অতি উচ্চমূল্য পাওয়া যায়। তার আঁকা বেশ কিছু ছবি পৃথিবীর সবচেয়ে দামী শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে গণ্য করা হয়। তিনি পয়েন্টিলিজম কৌশল গ্রহণ করেছিলেন, এটি এমন একটি কৌশল যার মধ্যে বেশ কয়েকটি ছোট রঙের বিন্দু ক্যানভাসে প্রয়োগ করা হয় যা দূর থেকে দেখলে রঙের একটি অপটিক্যাল মিশ্রণের মতো মনে হয়। শৈলীটি প্রাণবন্ত করার জন্য বা বৈপরীত্য তৈরি করতে নীল এবং কমলা সহ পরিপূরক রঙগুলির সক্ষমতার উপর জোর দেয় হতো।
![](https://gramnagarbarta.com/storage/photos/1/64252eea952ab.jpg)
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত