ভুটানের সঙ্গে জলবিদ্যুৎ-কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনা
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৪, ১৫:০১ | আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫০
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুকর সঙ্গে দেশটি থেকে জলবিদ্যুৎ আনা এবং কানেক্টিভিটি আরো বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (২৫ মার্চ) ঢাকা সফররত ভুটানের রাজার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভুটান থেকে আসরা জলবিদ্যুৎ আনছি, সে বিষয়টি আলোচনা করেছি। আমরা ইতোমধ্যে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। সেক্ষেত্রে ভারত আমাদের ফ্যাসিলেটেড করেছে। ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আনার ক্ষেত্রেও ভারত আমাদের ফ্যাসিলেটেড করবে। আমরা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ভারতের ওপর দিয়েই তো লাইন আসতে হবে। ভারত কিন্তু নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে ফ্যাসিলিটেড করেছে। সুতরাং ভুটান থেকে আমদানির ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে এটাই স্বাভাবিক।
বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে সকালে ঢাকায় আসেন ভুটানের রাজা। সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। রাজার সঙ্গে রানি এবং রাজ পরিবারের সদস্যরাও বাংলাদেশে এসেছেন। বিমানবন্দরে রাজাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন জিগমে খেসার। দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকের পর ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি নবায়নের কথা রয়েছে।
বৈঠকের পর ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি সংক্রান্ত কোনো চুক্তির সম্ভবনা আছে কি না —জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, জলবিদ্যুৎ সংক্রান্ত চুক্তি এই যাত্রায় সই হবে না। কারণ আমাদের আরেকটু কাজ করতে হবে। তবে আমরা আশা করছি, খুব সহসাই সেটি সই করতে পারব।
ভুটানের সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাড়ানো নিয়ে রাজার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা কুড়িগ্রামে ভুটানকে একটি ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গা দিয়েছি। একইসঙ্গে তাদের বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল) তাদের আবার যুক্ত করার বিষয়টি আলোচনায় তুলেছি।
হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি (রাজা) বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে শুনেছেন। এয়ার কানেক্টিভিটি আরো বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলেছি। কারণ সপ্তাহে মাত্র দুটি ফ্লাইট চলাচল করে। আমি কানেক্টিভিটি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেছি। মানুষ যাতে সড়ক পথে যেতে পারে। বিবিআইএনের দেশগুলোর নাগরিকরা যেন গাড়ি নিয়ে যেতে পারে, সে নিয়েও আলোচনা করেছি।
ভুটানের ট্রাভেল ট্যাক্স বিষয়ে আলোচনার প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি নির্দিষ্ট করে আলোচনা করিনি। এগুলো হচ্ছে ওয়ার্কিং লেভেলের আলোচনা। মূলত, বিবিআইএনে ভুটানের যুক্ত করার বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।
আজ দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে স্বাস্থ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পর্যটন, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি সমন্বয়, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ট্রানজিট, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি, ভারতকে সঙ্গে নিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিনিময়ে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা, স্বল্পোন্নত হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে উদ্ভূত চ্যালঞ্জেগুলো মোকাবিলায় সহযোগিতা আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
সফরের দ্বিতীয় দিন ভুটানের রাজা ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি র্অপণ করবেন, এরপর তিনি শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউিট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন। বিকেলে তিনি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
বাংলাদেশ সফরকালে পদ্মা সেতু দেখতে যাবেন ভুটানের রাজা। এ প্রসঙ্গে ড. হাছান জানান, ২৭ মার্চ ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু এবং নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবেন। সফরের শেষ ২৮ মার্চ দিন ভুটানের রাজা কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। ওইদিন বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে রাজা বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী রাজাকে বিদায় জানাবেন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গার্ড অব অনার প্রদান করবে।
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত