ভারতের পানিতে কাউনিয়ায় বন্যা, ১০টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ | আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:০৩
রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৩ সেঃমিঃ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন, ইতোমধ্যে ১০টি বাড়ি নদী গর্ভে চলেগেছে, প্রায় ২৫০ হেক্টর উঠতি ধান, বীজবাদাম, মরিচ ক্ষেতসহ ফসলী জমি তলিয়ে গেছে, শতশত পরিবার পানি বন্ধি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়নের চরাঞ্চল ইতোমধ্যে তিস্তার পানি প্রবেশ করে বন্যা দেখা দিয়েছে। টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগনাই গ্রামে ১০টি বাড়ি তিস্তা নদী গিলে খেয়েছে। হারাগাছ, শহীদবাগ, বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নের প্রায় ২৫০ হেক্টর ফসলী জমি তলিয়ে গেছে, শতশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। শতাধিক পুকুর ও মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে। কাউনিয়ায় তিস্তা সেতু পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তার তীরবর্তি গ্রাম গুলোতে দেখা দিয়েছে বন্যা। শনিবার রাত থেকে পানি বৃদ্ধির ফলে ইতোমধ্যে তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৪ ইউনিয়নের ৫ হাজার মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, কয়েকদিন থেকে টানা বৃষ্টি ও উজানের (ভারতের) ঢলের কারণে পানির চাপ সামলাতে তিস্তার ব্যারেজের ৪৪ জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে। তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ এখন ২৯ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটার। পানি বাড়ায় তিস্তা সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের মানুষদের মধ্যে দুর্ভোগ ও ভাঙ্গনের আতঙ্ক রয়েছে। ধান, বাদাম, শাক-সবজিসহ উঠতি বিভিন্ন ফসল পানিতে ডুবে যাওয়ায় বিপাকে পরেছে মানুষ। টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, চরগনাই গ্রামে নজরুল, সালাম, জলিল, সুজন, আজগর, সাঈদ, কাফি, আনিসুর, সুলতান, ও দুলু মিয়ার বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে, আরও ১১টি পরিবার ঝুকিতে রয়েছে, যে কোন সময় সেগুলোও তলিয়ে যেতে পারে। এছারও উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার আবু মোঃ মনিরুজ্জামান জানান অতিবৃষ্টি ও বন্যায় রোপা আমন ৭০ হেক্টর ও সবজি ফসল ২ হেক্টর আক্রান্ত হয়েছে। তবে কৃষকের ভাষ্যমতে আক্রান্ত ফসলের ক্ষেতের পরিমান অনেক বেশি। বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিত এলাকা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আহসান হাবীব সরকার, ইউপি চেয়ারম্যানগণ পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিদুল হক বলেন, তিস্তা নদী এলাকায় বন্যা ও ভাঙ্গনের বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ভাঙ্গন কবলিত ১০টি পারবারকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও ত্রাণ বিভাগ বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তত রয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত