বেগম রোকেয়া ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন আধুনিক নারী: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:৩১ | আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেগম রোকেয়া ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন আধুনিক নারী। আজ বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম রোকেয়া উপলব্ধি করেছিলেন সমাজ তথা রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। তার এই উপলব্ধি ও আদর্শ আজও আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন “বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আমি বাঙালি নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই। বেগম রোকেয়ার জীবনাচরণ নারী শিক্ষার প্রসারে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ বছর যারা ‘বেগম রোকেয়া পদক’ পেয়েছেন আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন পথিকৃৎ। তিনি বিশ্বাস করতেন দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এবং সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হলে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া তা সম্ভব নয়। তাই তিনি নারীর সমান অধিকার, সমমর্যাদা, সাম্য ও স্বাধীনতার অপরিসীম গুরুত্ব অনুধাবন করে সংবিধানে নারীর ক্ষমতায়নের শক্ত ভিত রচনা করেছিলেন। তিনি জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষিত রাখার বিধান করেন। ১৯৭২ সালেই চাকুরির ক্ষেত্রে নারীদের জন্য শতকরা ১০ ভাগ কোটা সংরক্ষণ করেন এবং ১৯৭৩ সালে তাঁর গৃহীত প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় নারীর জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে নারীকে সম্পৃক্ত করতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ধারণাকে বাস্তবায়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমাদের সরকার জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে নারীদের অংশগ্রহণ এবং রাষ্ট্র ও জনজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে আর্থসামাজিক উন্নয়নে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতে ও জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। নারীবান্ধব বাজেট প্রণয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে বিভিন্ন ভাতা প্রদান ও কর্মমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, নারী উন্নয়ন নীতিমালাসহ নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপদে কাজের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। সরকার নারীর মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি সর্বত্র নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। ফলে বাংলাদেশের নারীরা এখন নিজ নিজ ক্ষেত্রে সমহিমায় ও সক্ষমতায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেশের সার্বিক উন্নয়নে সফলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, চাকুরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা ও শিল্প-সংস্কৃতি তথা সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারীর অবস্থান এখন সাবলীল এবং সুদৃঢ়।
ডিজিটাল বাংলাদেশ এর সফল বাস্তবায়নে নারীর অংশগ্রহণ এখন দৃশ্যমান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নারী উন্নয়নের স্বীকৃতি হিসেবে আমরা জাতিসংঘের ‘প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছি। এসডিজি অর্জনে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সূচকে এগিয়ে থাকায় আমরা ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’ অর্জন করেছি। তাই বাংলাদেশ আজ নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বিশ্বের কাছে অনুকরণীয়। এদেশে সফল হয়েছে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন।”
তিনি ‘বেগম রোকেয়া দিবস ২০২১’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত