বৃটিশ আমলের রেলওয়ে হাসপাতালটির বেহাল দশা
প্রকাশ: ৫ আগস্ট ২০২৩, ১১:৩৬ | আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪০
বৃটিশ আমলে নির্মিত বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার জংশন স্টেশনের অবস্থিত সান্তাহার রেলওয়ে হাসপাতালটির বেহাল দশা। তীব্র জনবল সংকটে ভুগছে হাসপাতালটি। ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালটিতে কোন চিকিৎসক ও অনান্য পদে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়েছে। একজন ফার্মাসিস্ট দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। প্রাচীন এই হাসপাতালটির অবকাঠামো নড়ভরে। হাসপাতালের সামনে কয়েকটি ভাঙাচোড়া অব্যবহত, অপরিস্কার ভবন দাঁড়িয়ে আছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পোষ্যদের চিকিৎসাসেবা,দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে দ্রুত গিয়ে আহত রোগীর সেবা প্রদান,বিভিন্ন হাসপাতালে আহত রোগীদের খোঁজখবর রাখা, রেলওয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, রেলওয়ে স্টেশন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ এলাকা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, হাসপাতালের ভর্তিকৃত রোগীদের পথ্য ও খাদ্য সরবরাহ করা এবং দুর্ঘটনা মোকাবেলার জন্য সর্বক্ষনিক ভাবে আ্যম্বুলেন্স গাড়ী প্রস্তুতÍ রাখার জন্য রেলওয়ে
হাসপাতাল তৈরি করা হয়। বর্তমানে সান্তাহার রেলওয়ে হাসপাতালটিতে চিকিৎসক নেই, প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত নার্স নেই, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নেই, পরীক্ষাগার নেই আ্যম্বুলেন্স নেই, উন্নত ওষুধ নেই, ইনডোর সেবা নেই।। হাসপাতালটির মঞ্জুরীকৃত ২৭ জন জনবলের স্থানে আছে মাত্র ৮জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। কাগজে- কলমে ২২ শয্যা মজ্ঞুরী থাকার কথা থাকলে বর্তমানে আছে ১৩ শয্যা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ইনডোরে কোন চিকিৎসা সেবা না থাকায় রোগী ভর্তি হয়না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ২ জন চিকিৎসকের বিপরীতে একজনও কর্মরত নেই। চিকিৎসকের অনুপস্থিতে একজন ফার্মাসিস্ট শুধূ রোগীর বিবরনী শুনে ওষুধ দেয়। ইনডোর সিস্টার ইনচার্য ১ জন, কম্পিউটার অপারটের পদে ১ জন, ১ জন ড্রেসারার, ১ জন বাবুর্চি ও ১ জন মেডিসিন ক্যায়িয়ার কর্মরত আছেন। হাসপাতালটিতে সেনিটারি ইন্সপেক্টর ও জামাদার পদে নেই কোন জনবল। ২ জন খালসীর স্থলে আছেন ১ জন । সত্তরের দশকে হাসপাতালটিতে একটি উন্নত পরীক্ষনাগার থাকলেও বর্তমানে তা নেই। রেলওয়ের কোন কর্মকর্তা পরিদর্শনেও আসেন না। হাসপাতালটির ড্রেসারার আব্দুল মান্নান জানান, কোন চিকিৎসক না থাকায় ১ জন ফার্মাসিস্ট দিয়ে আউটডোর চালু রাখা হয়েছে।
হরিজন সম্প্রদায়ের লোকবল সহ দিনে ৩০/৪০ জন রোগীর চিকিৎসা সেবা ও বিনামুল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এ ব্যাপারে পাকশি রেলওয়ে বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার (ডিএমও) ডাঃ শাকিল আহমেদ জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, সান্তাহার রেলওয়ে হাসপাতালটির জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, অনান্য জনবল নিয়োগ সহ নানা প্রকার সুপারিশ রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ে সহ নানা হাসপাতালে প্রচুর জনবল সংকট আছে। এর মধ্যে দুই হাজার জনবল রিক্রুটমেন্টের প্রক্রিয়া চলমান আছে। অনান্য জনবল সংকটের চেষ্টা চলছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত