বিক্রয়ের জন্য রাখা বিপুল পরিমাণ ঘোড়ার মাংস ও রোগাক্রান্ত ঘোড়া জব্দ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৩৩ | আপডেট : ৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:১৮
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দারাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ঘোড়ার মাংস এবং জবাইয়ের জন্য প্রস্তুত রাখা ৩৭টি রোগাক্রান্ত ঘোড়া জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় কসাইখানায় গাজীপুর জেলা প্রশাসন, প্রাণিসম্পদ অধিদফতর, র্যাব-১ ও পুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান চালায়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কারখানার মালিক শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, শফিকুল এবং তার বাবা জয়নাল আবেদিন হায়দারাবাদ (রথখোলা) এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে এক বছর ধরে নিয়মিতভাবে ঘোড়া কিনে জবাই করতো। এরপর নিষিদ্ধ এই ঘোড়ার মাংস বিভিন্ন উপায়ে রাজধানীর উত্তরাসহ দেশের নানা জেলায় সরবরাহ করতো। প্রতি রাতে ৩০ থেকে ৪০টি ঘোড়া জবাই করতো শফিকুল। সেই মাংস সারা দেশে পাঠাতো। রাতে নিয়মিত ঘোড়া জবাইয়ের শব্দ, দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন। তারা বহুবার প্রতিবাদ করেছেন, কিন্তু কিছু হয়নি। পুরো পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছিল। এ ধরনের নিষিদ্ধ কাজ আর যেন আর না হয়, সে জন্য স্থানীয়রা এর স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও দণ্ডনীয় কার্যক্রম। এর আগে বিভিন্ন সময়ে শফিকুলকে তিনবার জরিমানা করা হয়েছিল। তবু সে থামেনি। এবার বড় আকারে অভিযান চালানো হয়েছে। ভবিষ্যতেও অভিযান চলবে। নিষিদ্ধ প্রাণী জবাইয়ের অভিযোগে মামলা করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জবাই করে মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যেই ঘোড়াগুলো এখানে আনা হয়েছিল। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা যায়নি, তাই উদ্ধার করা ৩৭টি রোগাক্রান্ত জীবিত ঘোড়া এবং ৮টি জবাই করা ঘোড়ার ৫ মণ মাংস স্থানীয় একজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে সেগুলোকে গাজীপুর প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করা হবে। উদ্ধার হওয়া ঘোড়াগুলোর অধিকাংশ রুগ্ণ এবং মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।’
র্যাব-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হায়দারাবাদ (রথখলা) এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় গোপনে ঘোড়া জবাইয়ের কার্যক্রম চলছিল বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। অভিযানে বিপুলসংখ্যক জীবিত ঘোড়া, জবাইয়ের সরঞ্জাম ও মাংস সংরক্ষণের নানা প্রমাণ পেয়েছি।’
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুর দিকে গাজীপুরের হায়দারাবাদ (রথখলা) এলাকায় শুরু হয় ঘোড়ার মাংস বিক্রি। পরে জেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে ঘোড়ার মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করেন। এরপর কয়েকদিন বন্ধ থাকলেও ফের গোপনে কসাইখানায় আবার শুরু হয় ঘোড়ার মাংস বিক্রি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত