বাংলাদেশকে ৪-১ গোলে হারিয়ে এশিয়ান কাপে মালয়েশিয়া

  ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২২, ২১:২২ |  আপডেট  : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪২

সাবলীল ফুটবল খেলে আসা বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলো না। দারুণ গতিময় ফুটবল খেলে মালয়েশিয়া ম্যাচের প্রায় পুরো সময় দাপট দেখালো। গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সামনে হাই প্রেসিং ফুটবল খেলে স্বাগতিকরা দুই অর্ধে দুটি করে গোল করে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। আজ (মঙ্গলবার) এশিয়ান কাপ ফুটবল বাছাইয়ে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের ৪-১ গোলে হারিয়ে মূল পর্বের টিকিট পেয়েছে মালয়েশিয়া।

২০০৭ সালের পর চতুর্থবারের মতো এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিলো দেশটি। ‘ই’ গ্রুপে বাহরাইন তিন ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন। সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট পেয়ে রানার্স-আপ হয়েছে মালয়েশিয়া। অন্যদিকে তিন ম্যাচে কোনও পয়েন্ট অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ।

১৯৯৭ সালে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে মালয়েশিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ২৫ বছর পর আবারও হারের তিক্ত স্বাদ নিতে হলো জামাল ভূঁইয়াদের।

কুয়ালালামপুরের বুকিত জলিল ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আগের একাদশ নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। শুরু থেকে মালয়েশিয়ার হাই প্রেসিং ফুটবলের সামনে পরীক্ষা দিতে হয়েছে জামালদের। তাদের দ্রুত গতির ফুটবলের সামনে রক্ষণ ঠিকঠাক রাখতে পারেননি বিশ্বনাথ-রিমনরা।

ম্যাচ ঘড়ির ৬ মিনিটে মালয়েশিয়া এগিয়ে যেতে পারতো। শফিক আহমেদের নিচু কোনাকুনি শট দূরের পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। এর একটু আগে করবিন অংয়ের হেড ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে যায়।

১২ মিনিটে শাফিউই রশিদের নেওয়া ভলি অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। চার মিনিট পর গোল হজম করে বাংলাদেশ। বক্সে নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়া করতে ব্যস্ত ছিলেন বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা। ইয়াসিন আরাফাতের পাস নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি আতিকুর রহমান ফাহাদ। স্লাইডে ক্লিয়ার করতে গিয়ে ফাউল করে বসেন ফয়সাল হালিমকে। তাতে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিকে রশিদের নেওয়া বাঁ পায়ের বুলেট গতির শট বলের লাইনে ঝাঁপিয়ে পড়লেও আটকাতে পারেননি আনিসুর রহমান জিকো।

বাংলাদেশ এই অর্ধে দুটি দারুণ সুযোগ পেয়ে একটি গোল শোধ দিতে পেরেছে। ২৬ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার দারুণ রক্ষণচেরা পাসে সাজ্জাদ হোসেন বক্সে ঢুকে শট নিতে পারেননি। এক ডিফেন্ডার স্লাইডে বল পাওয়ার পর রাকিব হোসেনও উড়িয়ে মেরে নষ্ট করেন সমতায় ফেরার ভালো সুযোগ।

তবে ৩০ মিনিটে সফল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। বিশ্বনাথের লং থ্রোয়ে রাকিবের ব্যাক হেডের পর মোহাম্মদ ইব্রাহিমও হেডেই জাল খুঁজে নেন। তুর্কমেনিস্তান ম্যাচেও একইভাবে গোল পেয়েছিলেন জাতীয় দলের এই উইঙ্গার। মাঠে আসা হাজার কয়েক বাংলাদেশি সমর্থক উল্লাসে ফেটে পড়ে।

যদিও বাংলাদেশের সমতায় থাকার স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৩৮ মিনিটে স্বাগতিকরা ঠিকই ব্যবধান বাড়িয়ে নেয়। ডিওন কুলস বক্সে থেকে কোনাকোনি জোরালো শটে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন। জিকো ঝাঁপিয়ে পড়েও প্রতিহত করতে পারেননি। ওই গোলেই এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মালয়েশিয়া।

বিরতির পর হাভিয়ের কাবরেরা একাদশে পরিবর্তন আনেন। সোহেল রানা, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, রহমত মিয়া ও মাহবুবুর রহমান সুফিল নামলেও ম্যাচের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারেননি। উল্টো এই অর্ধে আরও ২ গোল হজম করেছে বাংলাদেশ।

৪৭ মিনিটে মালয়েশিয়া ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেন। ফয়সাল হালিমের থ্রু থেকে শফিক আহমেদ বক্সের ভেতরে থেকে অনেকটা ফাঁকায় হেডে গোলকিপার জিকোকে পরাস্ত করেন।

বাংলাদেশ এই অর্ধে সুযোগ পায় ৫৭ মিনিটে। বিপলু আহমেদের নিচু ক্রসে বদলি ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের শট গোলকিপারের শরীরে লেগে প্রতিহত হলে হতাশ হতে হয়।

৭৩ মিনিটে স্বাগতিকরা চতুর্থ গোল করে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে দেয়। সতীর্থের নিচু ক্রসে বদলি ড্যারেন লক ফাঁকায় সহজেই প্লেসিং করে উল্লাসে মাতেন। ৬ মিনিট পর মালয়েশিয়ার দুর্ভাগ্য। আখিয়ার রশিদের প্রচেষ্টা ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে আরও বড় ব্যবধানে জেতা হয়নি। তবে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা পেতে ৪-১ গোলের জয়টাই যথেষ্ট ছিল তাদের।

তাতে মালয়েশিয়ার আনন্দের জোয়ারে ভেসে যাওয়ার বিপরীতে হতাশার সাগরে নিমজ্জিত বাংলাদেশ!

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত