বন্ধ হয়ে গেছে গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:২৮ | আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩:৩০
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানে এখন হাসপাতালগুলো নিশানায় পরিণত হয়েছে। চারটি হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি ট্যাংক। জ্বালানি না পেয়ে বন্ধ হয়ে গেছে গাজার সবচেয়ে বড় আল-শিফা হাসপাতাল। হাসপাতালটি খালি করে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এদিকে ইসরায়েলের ৩৬ দিনের নির্বিচার হামলায় গাজায় ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় আল-শিফা হাসপাতালের কার্যক্রম গতকাল শনিবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এতে ইনকিউবেটরে থাকা ৪৫ নবজাতকের একজন মারা গেছে। এর আগে আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলের হামলায় ১৩ জন নিহত হন।
টেলিফোনে রয়টার্সকে আশরাফ আল-কুদরা বলেন, ‘পরিস্থিতি যে কারও ধারণার চেয়ে ভয়াবহ। আল-শিফা হাসপাতাল কমপ্লেক্সে আমরা অবরুদ্ধ হয়ে আছি। দখলদার বাহিনী কমপ্লেক্সের ভেতরের বেশির ভাগ ভবনে হামলা চালিয়েছে।’
এর আগে শুক্রবার আল-রানতিসি শিশু হাসপাতালসহ চারটি হাসপাতাল ঘিরে ফেলে ইসরায়েলি ট্যাংক। রানতিসি হাসপাতালের জানালা দিয়ে চত্বরে ইসরায়েলি ট্যাংক দেখা যাচ্ছিল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার ১৩৫টি স্বাস্থ্য স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। জ্বালানিসংকট ও হামলার কারণে এখন পর্যন্ত ২১টি হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। ৪৭টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রও বন্ধ রয়েছে।
ইসরায়েলি হামলায় ১৯৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৫৩টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজা উপত্যকায় গড়ে প্রতি ১০ মিনিটে এক শিশু নিহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তিনি বলেন, ‘গাজায় কোনো জায়গাই নিরাপদ নয় এবং কেউই নিরাপদে নেই।’
গেব্রেয়াসুস বলেন, গাজার ৩৬টি হাসপাতালের অর্ধেক এবং ওই এলাকার প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর দুই-তৃতীয়াংশই বন্ধ হয়ে গেছে। গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ‘ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ডব্লিউএইচওর প্রধান।
গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে বিক্ষোভ করেছেন লাখো মানুষ। গতকাল দুপুরে এ বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। গতকাল বিক্ষোভ শুরুর আগে থেকেই বিক্ষোভস্থল হাইড পার্কে জড়ো হতে শুরু করেন নানা বয়সী লোকজন। গতকাল আবার ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের স্মরণ দিবস বা আর্মিস্টিক ডে। একই দিনে বিক্ষোভ ও স্মরণ অনুষ্ঠান ঘিরে সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকায় আগে থেকেই যুক্তরাজ্য পুলিশ সতর্ক অবস্থায় ছিল।
ন্যাশনাল মার্চ ফর প্যালেস্টাইন নামে এ বিক্ষোভ গতকাল স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় শুরু হয়। গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকেই এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন যুক্তরাজ্যের মানুষ। সে ধারাবাহিকতায় গতকালের বিক্ষোভে িতন লাখ মানুষ অংশ নেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তবে আর্মিস্টিক ডের কারণে যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গতকালের বিক্ষোভ বাতিল করতে বলা হয়। সেনোটাফ স্মৃতিসৌধে আয়োজিত সৈনিকদের স্মরণ দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে হাজারো পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়। এদিকে আর্মিস্টিক ডের দিন ফিলিস্তিনপন্থীরা বিক্ষোভ ডাকায় প্রধানমন্ত্রী সুনাক এর সমালোচনা করেন।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত