শোক দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরাতে সরকারকে সহযোগিতা করুন
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৩, ১১:৪৬ | আপডেট : ৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৭
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত যেসব খুনি এখনও বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছে, তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচারকাজ সম্পন্ন করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে, আসুন আমরা সরকারের প্রতি আমাদের সহযোগিতা আরও বাড়াই।
নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের সবার একযোগে কাজ করার বিকল্প নেই।
স্থায়ী মিশন জানায়, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস পালন অনুষ্ঠান আয়োজন করে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন। এতে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় দিবসটির কর্মসূচি। এরপর বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা এবং ১৫ আগস্টের সব শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে একমিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিতসহ উপস্থিত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতার জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিও প্রদর্শন করা হয় এ পর্বে। এরপর শুরু হয় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ। তার ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে স্বাধীনতা লাভের মাত্র সাড়ে তিন বছরে আমরা বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করেছি এবং বিশ্ব পরিমণ্ডলে একটি অত্যন্ত মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এমন একজন মহান ও বিশ্বনন্দিত নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি পৃথিবীর ইতিহাসে সেদিন সবচেয়ে বর্বরোচিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
জাতীয় শোক দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠনে দেশে ও বিদেশে আমাদের সমানভাবে কাজ করে যেতে হবে। একটি সুখী-সমৃদ্ধ-শান্তিপূর্ণ দেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে।
রাষ্ট্রদূত মুহিত জাতি, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের মধ্যে যারা এখনও বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সব প্রবাসী বাংলাদেশিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন, আমরা চাই জাতির পিতার কোনো খুনিই যেন বিচারের হাত থেকে পার না পায়।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত