বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২১, ১৩:২৪ | আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:২৬
বগুড়ায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সদর উপজেলার ফাঁপোড় ইউনিয়নের হাটখোলা বাজারে মঙ্গলবার রাত সাড়ে টার দিকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহত মমিনুল হক রকি ফাঁপোড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ফাঁপোড়ের মণ্ডল পাড়ার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে এবং রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা করতেন। তার নামে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র ও সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, রকি ওই এলাকায় বসবাস না করে উপশহরে থাকতেন। তবে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে তিনি প্রায়ই বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে এলাকায় যেতেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাটখোলা বাজারের নামায পড়া শেষে মসজিদের সামনের এলাকায় লোকজনের সঙ্গে গল্প করছিলেন। এ সময় একদল দুর্বৃত্ত তাকে ঘিরে ফেলে। পরিস্থিতি বুঝে লোকজন সরে গেলে দুর্বৃত্তরা ধারাল অস্ত্র দিয়ে রকিকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। এ সময় তার সাথে থাকা বোন জামাই সুমন তাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন।
পরে তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। সেখানে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শজিমেক হাসপাতালে রকিকে নিয়ে আসা স্বজন ও প্রতিবেশীদের সাথে কথা হয়। তারা জানান, রকি এশার নামায পড়ে স্থানীয়দের সাথে কিছুক্ষণ আলাপ করে বাসায় চলে আসেন। আজ রাত সাড়ে ৮টার দিকে রকি মসজিদে এশার নামাজ পরে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় হাটখোলা এলাকায় পৌঁছালে ১৫ থেকে ২০ জন দুর্বত্তরা রকিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথাসহ পুরো শরীরে কুপিতে জখম করে।
মণ্ডল পাড়ার আসিফ রহমান জানান, আমরা টিভি দেখছিলাম। হৈচৈ শুনে বের হই। শুনতে পাই রকি ভাইকে মারছে। পরে হাটখোলায় গেলে দেখি রকি ভাই মাটিতে পড়ে আছেন। তখন তাকে একটা অটোরিকশায় তুলে নিয়ে হাসপাতালে আসি। কিন্তু ডাক্তার জানান তিনি মারা গেছেন।
নিহতের খালাতো ভাই শাহাদত হোসেন সনি জানান, এলাকার মাদকাসক্ত ও বখাটে ছেলেরা আমার ভাইকে মেরেছে। আমার ভাই তাদের খারাপ কাজে বাঁধা দিত এ নিয়ে শত্রুতা কারণে তারা আমার ভাইকে খুন করেছে।
রকির ছোট ভাই রুকু বলেন, স্থানীয় বখাটে ছেলেরা রকি ভাইয়ের উপর হামলা করেছে। আমরা যখন ঘটনাস্থলে যাই তখন তারা চলে যাচ্ছিল। এর মধ্যে গাউসুল নামে একজনকে দেখতে পেয়েছি।
রকির মৃত্যুর খবর শুনে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান সফিক, সাধারণ সম্পাদক মাহাফুজুল আলম রাজ, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আল রাজী জুয়েলসহ দলীয় নেতাকর্মীরা শজিমেক হাসপাতালে আসেন।
এ সময় সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক বলেন, রকি ফাঁপোড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্বীো তা করার উদ্যোগ নিচ্ছিলেন। আমরা আমাদের সংগঠনের নেতা হত্যার বিচার চাই।
মাহফুজুল আলম রাজ বলেন, মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া পথে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে এমন ঘটনা বগুড়াতে নতুন নয়; এর আগেও হয়েছে। আমরা চাই সন্ত্রাসীরা যেই হোক তাদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হোক।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ জানান, হত্যার পরপরই ওই এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে। পুলিশের একাধিক দল জড়িতদের শনাক্ত করতে মাঠে নেমেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত