ডিসির বরাবরে লিখিত প্রদান
পঞ্চগড় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ঘুষ দাবী, হয়রানীর শিকার কৃষকরা
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:১১ | আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৫৩
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে হয়রানীর শিকার পঞ্চগড়ের কৃষকরা। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক পঞ্চগড় সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভূক্তভোগী এলাকার কৃষকরা। তাদের অভিযোগ ঘুষের টাকা না দেয়ায় মিটার সংযোগে হয়রানী করছে ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুতের পঞ্চগড় জোনাল অফিস।
জানা যায় পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের সেচ মিটার না পেয়ে সময়মতো চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা। সেচ দিতে না পেরে সবজি আবাদে ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি বোরো, ভুট্টা,গম,বাদাম আবাদে সময় ক্ষেপন হচ্ছে। এতে চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
জানাগেছে কৃষি শিল্পকে আরও আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির আওতায় আনতে কাজ করছে সরকার। সরকারের এই পরিকল্পনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রত্যেক উপজেলায় উপজেলা সেচ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা সেচ কমিটি বড়শশী, কালিয়াগঞ্জ ও চাকলা হাট ইউনিয়নের বেশ কিছুসংখ্যক চাষিকে অগভীর সেচ পাম্প বসানোর লাইসেন্স প্রদান করে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স পাওয়ার পর ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিনা খরচে চাষীদের বৈদ্যুতিক মিটার ও লাইন সংযোগ প্রদান করবে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে মিটার সংযোগ পেতে নানা রকম হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে চাষীদের। লাইসেন্স প্রাপ্ত চাষিদের কাছে মিটার সংযোগ দেয়ার জন্য মোটা অংকের ঘুষ দাবি করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পঞ্চগড় জোনাল অফিসের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে চাষীদের কাছ থেকে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
পঞ্চগড় অফিসের পাওয়ার হাউস কো-অর্ডিনেটর রমজান আলী ওই চাষীদের কৃষি জমি এবং সেচ পাম্পের বোরিং পরিদর্শনে গেলে এই ঘুষ দাবি করেন। এ ঘটনায় চাষিরা সম্প্রতি জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। চাষিরা বলছেন মিটার সংযোগ না পাওয়ার ফলে চাষাবাদে ব্যাপক ক্ষতির সমুক্ষিন হচ্ছেন তারা। বোরো, বাদাম, ভুট্টা সহ নানা রকম ফসলের চারা রোপনের সময় চলে যাচ্ছে তাদের। দ্রুত সংযোগ না পেলে তারা এবছর সঠিক সময়ে চাষাবাদ করতে পারবেন না ।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তারা। কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের ধামেরঘাট ঝারপাড়া গ্রামের সবজি চাষি আব্দুস ছালাম (৬৫) জানান, আমি সেচ পাম্পের সরকারি লাইসেন্স পেয়েছি। বোরিং করেছি। কিন্তু রমজান আলী পরিদর্শনে এসে বোরিং নাই লিখে প্রতিবেদন দিয়েছেন। কাগজ ছিড়ে দিয়েছে। আমার কাছে দেড় লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছে। তিনি আমাকে বলেন টাকা নিয়ে আসেন। উনি ফু দিলেই নাকি পানি বের হবে। সেচের অভাবে আমার বেগুন, মরিচ, ভুট্টা খেত মরে যাচ্ছে।
বড়শশী ইউনিয়নের খালপাড়া গ্রামের বাদশা আলী জানান, আমরা বোরো চাষাবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করেছি। কিন্তু সেচের জন্য রোপন করতে পারছিনা। শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিলে আমাদের খরচ বেশি হয়ে যাবে। পল্লী বিদ্যুত অফিসে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলেছে। আমি কোথায় পাবো টাকা। যে জমিতে সেচ দেবো সেই জমি বিক্রি করে কি ঘুষ দেবো। তবে ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি রমজান আলী অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন এরকম কাজ আমি চাকুরী জীবনে কোনদিন করি নাই। ঠাঁকুরগাও পল্লী বিদ্যুত সমিতি পঞ্চগড় জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার গোলাম রাব্বানী বলেন টাকা পয়সা ওই ভাবে চায়নি। লাইন নির্মাণ ব্যয় আছে সেই টাকা দিতে বলা হয়েছে ‘ এবং তা রশিদ মূলে অফিসে এসে দিতে হয়। তবে সেই টাকা রশিদ ছাড়া লেনদেন হয়না বলে দাবি করেন।এই কর্মকর্তা আরো বালেন ঘূষ লেনদেনের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত