পঞ্চগড়ের নবারুণ উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

  মোঃ কামরুল ইসলাম কামু

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৮ |  আপডেট  : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:০৩

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ নবারুন দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূনীর্তি ও সম্পদ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। সদ্য বিলুপ্ত ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক সহ স্থানীয়রা বিভিন্ন দপ্তরে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে বিশৃংখল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে পড়াশোনার মান কমে কমে গেছে।

১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থাকা অবস্থায় সেনাবাহিনীর উদ্যোগে গড়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জ নবারুণ দ্বি-মুখি উচ্চ বিদ্যালয়। দীর্ঘকাল ধরে বিদ্যালয়টির অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থী নানা বিষয়ে সুনাম কুড়িয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী শাসনামলে বিদ্যালয়টি অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার আখরায় পরিণত হয়। স্থানীয়রা বলছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষাব্যবস্থা একদম ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষক সংকটের কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে এই বিদ্যালয়ের প্রায় ২৫ বিঘা জমি রয়েছে। জমিতে আবাদ করলে প্রতিবছর প্রায় ৫০ লাখ টাকা আয় হওয়ার কথা। অথবা কৃষকদেরকে লিজ দিলেও বছরে ২৫ লক্ষ টাকা আয় হওয়ার কথা। কিন্তু জমির দলিল বিদ্যালয়ের আলমারীতে সংরক্ষিত থাকলেও মাঠ পর্যায়ে কোন জমির হদিশ নেই। প্রায় দুই একর যায়গা জুড়ে একটি পুকুর থাকলেও পুকুরের আয় ব্যায়ের কোন হিসাব নেই। অন্যদিকে বিগত ম্যানেজিং কমিটি বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে সৃত্র জানা যায়, গত ২০২৩ সালে ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী, নৈশ্য প্রহরী, অফিস সহায়ক ও আয়াসহ চারটি পদের নিয়োগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,সদ্য বিলুপ্ত ম্যানেজিং কমিটি ও নিয়োগ কমিটির সদস্যরা প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ঘুষের বিনিময়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ প্রদান করে নিজেদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি করে নেন। বিদ্যালয়টির এমন পরিনতির জন্য বিদ্যালয়ের তথ্য ও গ্রন্থাগারিক সহকারী শিক্ষক ও আওয়ামীলীগ নেতা আবুল বাশার বাবুল, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সভাপতি মোস্তফার রহমান এবং প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হোসেনকে দায়ি করেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধার এবং পুরোনো নিয়োগ বাতিল করে নতুন করে সংস্কার করতে হবে। স্থানীয় অবিভাবক আব্দুল জলিল বলেন, বিদ্যালয়ে নিয়োগ দিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রধান শিক্ষক,ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও বাশার মাস্টার। বিদ্যালয়ের অনেক জমি রয়েছে সেই জমি থেকে যে আয় হয় তা তাদের পকেটে ভরে । অথচ এই আয় দিয়ে বিদ্যালয় ও শিক্ষার মান উন্নয়ন করা যেতো। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবী জানাচ্ছি।

এবিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের তথ্য ও গ্রন্থাগারিক সহকারী শিক্ষক আবুল বাশার বাবুল বলেন,আমার নামে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা মিথ্যা। আমি কোন অনিয়ম বা দূনীর্তির সাথে জড়িত নই । আমি শিক্ষক প্রতিনিধি ছিলাম কিন্ত আমার যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব শুধু পালন করেছি। এদিকে সদ্য বিলুপ্ত ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তফা রহমান বলেন, আমি দায়িত্ব থাকা অবস্থায় যে নিয়োগ হয়ে ছিল তা নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে। যারা যোগ্য ও মেধাবী তারাই নিজ নিজ যোগ্যতায় চাকুরী পেয়েছে। আমরা কোন অর্থ লেনদেন করিনি।

এবিষয়ে বোদা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট সহ অনিয়মের বিষযটি শুনেছি। যেহেতু বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমি তাকে বিষয়টি অবহিত করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়টির বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার নজির বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

সান
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত