নিউমার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মির্জা ফখরুলের প্রশ্ন
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২২, ১৯:৩২ | আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩২
নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে একজনের প্রাণ হারানোর ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নিউমার্কেট সংঘর্ষের ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রায় তিন ঘণ্টা নিষ্ক্রিয় ছিল। কোন কারণে আপনারা নিষ্ক্রিয় ছিলেন, যে কারণে দেশের মানুষ নিহত হবে? যে কারণে একটি সমস্যা তৈরি হবে? যখন বিএনপি’র ছোটখাটো একটি কর্মসূচিকে প্রতিরোধ করার জন্য মুহূর্তের মধ্যে হাজার হাজার পুলিশ সেখানে জড়ো হয়ে পড়ে?
বুধবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদ, গুম ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের মাঝে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ-উপহার বিতরণের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় ৬টি পরিবারের মাঝে ঈদের এই উপহার বিতরণ করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের কাজ হচ্ছে টিকে থাকতে মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার করা। তাদের ক্ষমতায় থাকার বড় উৎসই হচ্ছে গোটা সমাজে, গোটা রাষ্ট্রে একটি ভীতি ও ত্রাসের সঞ্চার করা। এই ব্যর্থ অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার সেভাবেই এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে রয়েছে।
তিনি বলেন, গুম খুনের প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন করেছি। গুম হয়ে যাওয়া পরিবারগুলো আন্দোলন করেছে। এমনকি অনেকে জেনেভায় পর্যন্ত গিয়েছে হিউম্যান রাইটস কমিশনে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেইভাবে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা করতে পারেনি। তবে এবার বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে, তা হলো– র্যাবের ৭ জন কর্মকর্তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর নিষেধাজ্ঞা। তার প্রমাণ হচ্ছে ইউএস হিউম্যান রাইটসের রিপোর্টে প্রত্যেকটি ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরা। একইসাথে দেশে যে কোনো বিচার ব্যবস্থা নেই, সম্পূর্ণভাবে অধিকরণ করা হয়েছে; তার প্রমাণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে কারাগারে নেয়ার বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ভাবে উল্লেখ করা।
তিনি বলেন, আজকে এটা প্রমাণিত সত্য যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। এটাও প্রমাণিত যে, বাংলাদেশে একনায়কতন্ত্র চলছে, স্বৈরাচার চলছে। অবৈধ সরকার জবরদখল করে ক্ষমতায় বসে আছে। প্রমাণিত সত্য আজকে এখানে গুম করে খুন করে নির্যাতন করে মানুষকে কারাগারে পাঠিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে। এখন সময় এসেছে রুখে দাঁড়াবার।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার আজকে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আর এই ব্যর্থ সরকার রাষ্ট্রকে দাঁড় করাতে চায়? কোথাও তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আজকে যে বিষয়টি সবচেয়ে বড় দেখা দিয়েছে– কোথাও তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। আজকে পুলিশকে জবাবদিহি করতে হয় না। অন্যান্য ডিপার্টমেন্টগুলো আছে, সেখানে কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। চুরি করে দুর্নীতি করে, সেখানেও জবাবদিহি করতে হয় না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন ছদ্মবেশী একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চলছে। এখন তাদের (আওয়ামী লীগ) যে লক্ষ্য, আগামী নির্বাচনে কী করে তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবে, কী করে তারা আবার ক্ষমতায় আসবে সেই লক্ষ্যে তারা সমস্ত কিছু করা শুরু করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের যারা খুন হয়েছে তাদেরকে আমরা ফিরে পাবো না, তাদের পরিবার কষ্ট পাচ্ছেন। আর যারা গুম হয়েছে, তাদের পরিবার– আরো বেশি কষ্ট পাচ্ছে। কারণ তারা জানে না তাকে খুন করা হয়েছে নাকি বেঁচে আছে।
তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন তাহলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এই ভয়াবহ দানবীয় শক্তি, এই অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে একটি বাসযোগ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য আমাদেরকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশ সবসময় আন্দোলনের মধ্য দিয়েই সবকিছু অর্জন করেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন– বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজয় কান্তি সরকার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার, শাহরুল কবির খান প্রমুখ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত