নন্দীগ্রামে চড়া দামেও মিলছে না আলু বীজ
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৩ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১০
বগুড়ার নন্দীগ্রামে চড়া দামেও মিলছে না আলু বীজ। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। শস্যভান্ডার খ্যাত নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা আমন ধান কেটেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে রবি শস্য চাষে। তাই এসময় নন্দীগ্রামে উপজেলায় আলু চাষের জন্য ফসলি জমি প্রস্তুত করার কাজ চলছে। এজন্য কৃষকদের আলু বীজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু চড়া দামেও এখন মিলছে না আলু বীজ। একারণে আলু চাষের প্রস্তুতি নিয়েও হতাশ নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা।
জানা গেছে, বিএডিসি অনুমোদিত ৩০জন ডিলার থাকলেও তাদের সিন্ডিকেটের কারণে দেখা দিয়েছে আলু বীজ সঙ্কট। যেকারণে চড়া দামেও মিলছে না আলু বীজ। এবছর আলু চাষ বৃদ্ধি হবার সম্ভাবনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি দামে আলু বীজ বিক্রি করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এঅবস্থায় আলুর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার নন্দীগ্রাম উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। ধান কাটার পরই আবহাওয়া অনুকূূল থাকায় কৃষকরা আলু চাষের প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই আলু বীজ সঙ্কটে পড়েছে কৃষকরা।
এই উপজেলায় ৩০জন বিএডিসি ডিলার থাকলেও তাদের তৈরি করা কৃত্রিম সঙ্কটের কারণে কার্ডিনাল ও ডায়মন্ডসহ কোনো জাতের আলু বীজ অধিক টাকায়ও মিলছে না। গোপন সুত্রে জানা যায়, ডিলাররা আলু বীজ উত্তোলন করে অধিক দামে অন্য উপজেলাগুলোতে বিক্রয় করেছে। আর এতেই নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা ডিলারদের কাছে আলু বীজ নিতে গেলে বীজ নেই বলে তারা জানিয়ে দিচ্ছে। বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, আলু বীজ নেই বললেও কোনো কৃষক প্রতি ৪০ কেজির বস্তা ৫ হাজারের বেশি টাকা দাম দিতে চাইলে অসাধু ডিলাররা তাকে রাতের আধারে আলু বীজ পৌঁছে দিচ্ছে।
বিএডিসির নির্ধারিত মূল্য তোয়াক্কা না করে আলু বীজ সঙ্কট সৃষ্টি করে অসাধু ডিলাররা এভাবেই কৃষকদের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আবার কোনো কোনো কৃষক অগ্রিম টাকা দিয়েও বীজ পাচ্ছে না। অথচ ডিলারদের কাছে ‘এ’ গ্রেড আলু বীজ প্রতিমণ ৩ হাজার টাকা ও ‘বি’ গ্রেড আলু বীজ প্রতিমণ ২-৩ হাজার টাকায় বিক্রি করার কথা থাকলেও সেই দরে বিক্রি হচ্ছে না। এদিকে কৃষকরা বিএডিসি আলু বীজ না পেয়ে ব্র্যাকের আলু বীজের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ফলে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্র্যাকের ডিলাররা নির্ধারিত মূল্যের চাইতে অধিকমূল্যে আলু বীজ বিক্রয় করে অধিক লাভের অংক গুণছে। এবিষয়ে ব্র্যাকের একজন ডিলারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি মাত্র ১৫ টন ব্র্যাকের। আলু বীজ বরাদ্দ পেয়েছি। এই পরিমাণ আলু কয়জনকে দিবো? তা নিয়ে এখন চিন্তাই আছি। বিএডিসির ডিলার কোরবান আলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, কৃষকরা বিএডিসির আলু বীজ নিতে চায় না তাই উত্তোলন করিনি। নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আলু চাষে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তাই আলু বীজ নিতে ডিলারদের কাছে কৃষকদের ভিড় জমেছে। কিন্তু আলু বীজ না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
এবিষয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আলু বীজ সঙ্কট নেই, তবুও যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত