দেশে চায়ের দোকান সাড়ে তিন লাখ
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৩৬ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩:২৪
দেশে ১০ বছর আগে হোটেল রেস্তোরাঁর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার। ২০২১ সাল পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি। আর এর মধ্যে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮৭টিই হচ্ছে চায়ের দোকান। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘হোটেল-রেস্তোরাঁ জরিপ ২০২১’-তে এই তথ্য উঠে এসেছে। আর এ খাতে নিযুক্ত ব্যক্তি আছেন প্রায় ২০ লাখ। তবে বাংলাদেশ হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির অধীনে আছে মাত্র ৬৫ হাজার রেস্তোরাঁ। এই খাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও এই খাতের মূলধন কত তা জানা নেই কারও।
বিবিএস’র জরিপ বলছে— ১৯৯২-৯২ সালে হোটেল–রেস্তোরাঁর সংখ্যা ছিল এক লাখ ১৭ হাজার ৯৮১টি। এরপর ২০০২-০৩ সালে সেটি দাঁড়ায় ২ লাখ ১৫ হাজার ১০৩টিতে, ২০০৯-১০ সালে হোটেল রেস্তোরাঁর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার ৩২৪টি, আর ২০২১ সালে সেই সংখ্যা দাড়ায় ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টিতে।
এর মধ্যে সরকারি মালিকানায় আছে ৮৫২টি, যা ১৯৯২-৯২ সালে ছিল ১৩৩টি, ২০০২-০৩ সালে ৭১৩, ২০০৯-১০ সালে ৬৩৯টি ছিল। আর বেসরকারি মালিকানায় আছে চার লাখ ২৭ হাজার ৬৯৪টি।
বিবিএস’র তথ্য বলছে, স্বল্প মেয়াদে অবস্থান করা যায়— এমন হোটেলের সংখ্যা শহর এলাকায় ২ হাজার ৮৮৯টি এবং শহরের বাইরে ৩০১টি। অর্থাৎ আবাসন হোটেল আছে ৩ হাজার ১৯১টি। এছাড়া রেস্তোরাঁ এবং ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান আছে ১৯ হাজার ৬৩৭টি। চায়ের দোকান আছে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮৭টি, যার মধ্যে শহরে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩৯৩টি এবং গ্রামে ১ লাখ ৮৫ হাজার ২৯৫টি আছে।
এছাড়া ফাস্ট ফুডের দোকান/ রেস্তোরাঁ আছে ৬৭ হাজার ৯৯১টি, ক্যাটারিং সার্ভিস আছে ১২৬টি এবং বাকিগুলো অন্যান্য খাতে দেখানো হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, এই খাতে নিযুক্ত কর্মীদের মধ্যে পুরুষ ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৯৭০ জন, যা ১০ বছর আগেও ছিল সাড়ে ৮ লাখ এবং নারী নিযুক্ত আছেন ১ লাখ ৭৩৭ জন, যা ১০ বছর আগে ছিল প্রায় অর্ধেক।
হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা বলছেন, রেস্তোরাঁ বাড়লেও ওই রকম মানসম্পন্ন রেস্তোরাঁ আছে খুবই অল্প। তবে গত কয়েকবছরে এই খাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে।
ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডে সম্প্রতি চালু হওয়া এক রেস্তোরাঁর মালিক নাম প্রকাশ না করে জানান, অনেক রিস্ক নিয়ে এখন এই খাতে বিনিয়োগ করতে হয়। এত রেস্তোরাঁ চার দিকে যে, এগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা বেশি। এর সঙ্গে আছে বর্তমানে নিত্যপণ্যের মূল্য, প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, আমরা তো প্রতিদিন আর মেন্যু বদলাতে পারি না।
এই মালিকের আরও দুটি রেস্তোরাঁ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, সপ্তাহে হয়তো আমরা এক-দুই দিন ব্যবসা করতে পারি। বাকি দিন কিন্তু খালি থাকে প্রায়। অনেক সময় কর্মচারী বেতন, ভাড়া তুলতেই কষ্ট হয়ে যায়।
গত ৮ বছর পথের ধারে চা বিক্রি করেন ফজর আলী। তিনি জানান, এখান থেকে বাজারে যাওয়ার পথে চায়ের দোকান পরে অন্তত ২০টা। বাজারের রাস্তা এক কিলোমিটারও না। আমি যখন থেকে ব্যবসা করি, তখন হয়তো ২-৩টা ছিল।
চা ব্যবসায়ীরা জানান, চায়ের দোকান বেড়েছে চাহিদার ভিত্তিতে। একটি স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চায়ের দোকান আছে অন্তত ৫টি। আবার কোথাও এক বাস টার্মিনালের কাছেই চায়ের দোকান আছে ১০টা।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিগত সময়ে এই খাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এই খাতে অনেক ভালো ভালো কোম্পানি এসেছে, অনেক প্রশিক্ষিত জনবল আছে এখানে। সরকারি হিসাবে ৪ লাখ ৮১ হাজার হলেও আমাদের অধীনে আছে ৬৫ হাজার সদস্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই খাতের এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে— নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি। ক্রেতা কমে গেছে, বিক্রি কমে গেছে। অনেক রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত