দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন দুদকের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:৪৮ | আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:৪৬
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সাবেক জেল ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি বর্তমানে দলটির উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য। রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে তার পক্ষে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন আজ রবিবার (১২ এপ্রিল)। এদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টার মধ্যে নির্বাচন কর্মকর্তার (সিইসি) দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। বিকাল ৪টার মধ্যে আর কেউ মনোনয়ন জমা না দিলে বা আর কোনও প্রার্থী না থাকলে এককপ্রার্থী হিসেবে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।
আর একাধিক প্রার্থী থাকলে তফসিল অনুযায়ী, সংসদের অধিবেশন কক্ষে ভোট অনুষ্ঠিত হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে। বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেন সংসদ সদস্যরাই। সেক্ষেত্রেও জাতীয় সংসদের ৩৫০টি আসনের সংসদে আওয়ামী লীগের সদস্য সংখ্যা এখন ৩০৫। তাই একতা নিশ্চিতভাবে বলাই যায় যে, টানা দুই বারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পর বঙ্গভবনের বাসিন্দা হতে যাচ্ছেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনই।
এদিন রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন জমা দিতে সকাল পৌনে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে আসে। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চিফ হুইপ লিটন চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ফারুক খান, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ প্রমুখ। তারা ইসি ভবনে পৌঁছানোর মিনিট দশেক পরেই সেখানে এসে পৌঁছান মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল। উল্লেখ্য যে, রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নে প্রার্থীর নিজেরও স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়।
মনোনয়নে প্রস্তাবক হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সমর্থক হিসেবে ড. হাছান মাহমুদ স্বাক্ষর করেন।
বেশ কিছুদিন ধরে নানান গুঞ্জণের পর অবশেষে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর নাম জানা গেলো। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন পেশায় একজন আইনজীবী এবং বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য। তিনি ১৯৪৯ সালে পাবনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইতোপূর্বে জেলা, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মোহাম্মাদ সাহাবুদ্দিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি ১৯৭১ সালে পাবনা জেলায় স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর হত্যার পর তিনি দীর্ঘ তিন বছর কারাগারে বন্দি ছিলেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘১৯৮২ সালে তিনি বিসিএস ক্যাডার হিসেবে বিচার বিভাগে যোগ দান করেন। ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন।’
তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি ২০০১ সালে সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাকর্মীদের দ্বারা সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন এবং মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধানে গঠিত বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন-এর চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।’
এর আগে আওয়ামী লীগ মনোনীত রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিতে নির্বাচন কমিশন ভবনে পৌঁছেছে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল। রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল পৌনে ১১টার তারা আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে পৌঁছান।
নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে অন্যদের মধ্যে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড হাছান মাহমুদ ও দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া রয়েছেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত