কাউনিয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে তৈরি হচ্ছে জৈব সার
জৈব সার তৈরী করে মামুন একজন সফল উদ্যোগতা
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২২, ১৫:৩০ | আপডেট : ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৭
পরিকল্পনা, পরিশ্রম, আর মেধা দিয়ে কৃষি বিভাগের সহায়তায় কাউনিয়ায় ভার্মি কম্পোষ্ট কেঁচো সার উৎপাদন করে মামুনের বাজিমাত। সে এখন লাখোপতি, তার কারখানায় কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের। সে এখন সবার কাছে অনুকরণীয় ও সফল উদ্যোক্তা। তার দেখা দেখি অনেক বেকার যুবক এ কাজে উৎসাহিত হয়ে কেঁচো সার তৈরির কাজে হাত দিয়েছে। জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার প্রয়োগের ফলে জমিতে জৈব পদার্থ কমে যাচ্ছে। জমিতে ৫ ভাগ জৈব পদার্থ থাকার নিয়ম থাকলেও বর্তমানে আছে ১ভাগ। ফলে জমির স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে জৈব সারের কোন বিকল্প নেই। কৃষি বিভাগের ঐকান্তিক চেষ্টায় কাউনিয়ায় বেশ কিছু জৈব সার তৈরীর কারখানা গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে টেপামধুপুর ইউনিয়নের নিজদর্পা গ্রামে সফল একটি কারখানার নাম মামুন ভার্মি কম্পোষ্ট সার কারখানা।
সরেজমিনে জৈব সারের কারখানাটি পরিদর্শন শেষে কথা হয় মামুন কেঁচো সার খানার মালিক মামুনের সাথে, তিনি জানান বেশিদুর তার পড়ালেখা নেই। হাইস্কুলের গন্ডি পার হতে পারেনি। তাই চাকুরি তার হবেনা জেনে কৃষি বিভাগের পরামর্শে ২০১১ সালে ২টি রিং এ গোবর, লতাপাতা, কচুরিপানা, শাকসবজির উচ্ছিষ্ট ছালে কেঁচো রেখে প্রথম কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেন। এখন তার রিং সংখ্যা ৮০টি আর ছোট বড় হাউজ ৪০ রয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে নিজ জেলা রংপুর ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা উপজেলায় সার বিক্রি করছেন তিনি।
নিজদর্পা কৃষি কল্যান সিআইজি সমিতি লিঃ এর নামে তিনি একটি কারখানা গড়ে তুলতে তার প্রায় ১৪লাখ টাকা খরচ হয়েছে এবং এনএটিপি-২ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে তাকে প্রায় ৬লাখ টাকা সহায়তা প্রদান করে। মামুনের কারখানায় প্রতিমাসে ৭ থেকে ৮ টন সার উৎপাদন হয়। প্রতিবস্তা সার উৎপাদন খরচ প্রায় ৩শ' টাকা আর বাজারে বর্তমানে প্রতি বস্তা সার বিক্রি হচ্ছে ৫শ' টাকা দরে। তিনি ৪জন কর্মচারির বেতন দিয়ে তার প্রতিমাসে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা আয় হয়। তার সার বিশেষ করে সাদ বাগান ও সবজি চাষিদের কাছে বেশী। তিনি এখন নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলায় বিক্রি করছেন। মামুন এখন কেঁচো সার মামুন নামে এলাকায় পরিচিত। সেই সাথে বেকার যুবকদের কাছে অনুকরণীয়।
কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহনাজ পারভীন এর কাছে মামুন ভার্মি কম্পোষ্ট সার কারখানা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য পেতে মাটিতে জৈব সার দিয়ে ফসল ফলানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই বর্তমানে জৈব সার দিয়ে ফসল ফলানোর প্রক্রিয়া জনপ্রিয় হচ্ছে। মাটির গঠন ও গুণাগুণ ঠিক রাখতে জৈব সার ব্যবহার করে মাটিকে উৎপাদনক্ষম করতে হয়। তাই জৈব সার তৈরি ও সংরক্ষণের ব্যাপারে কৃষকদের যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। ইতোমধ্যে মামুন সার বাজারজাত করে সুনাম অর্জন করছে। মামুনের ভার্মি কম্পোষ্ট জৈব সার কারখানায় কৃষিবিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। মামুনের তৈরী জৈব সার কৃষিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এবং কৃষকরা উপকৃত হচ্ছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত