গরুর খুরা রোগ বৃদ্ধির শঙ্কা
কাউনিয়ায় শুকুরের অবাধ বিচরণে পানি ও পরিবেশ দূষণ
সারওয়ার আলম মুকুল
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:০০ | আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪১
রংপুরের কাউনিয়ায় জনবসতিপূর্ণ এলাকায় শুকুরের অবাধ বিচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে পরিবেশ দূষন ও গরুর খুরা রোগ বৃদ্ধির আশংকা করছেন গরুর খামারীরা। রাস্তা ও জলাশয়যুক্ত জমিতে বিচরনের ফলে পানি দূষিত এবং ক্ষতিকর জীবাণু ও রাসায়নিক পদার্থের বিস্তার ঘটাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে কাউনিয়া উপজেলার পার্শের জেলা লালমনিরহাট সদর এলাকার শুকুর পালনকারী একদল ডোম-ডাওয়াই শতশত শুকুর কে খাওয়ানোর জন্য রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে কাউনিয়ার বিভিন্ন গ্রামে নিয়ে গিয়ে ক্ষেতে খামারে, রাস্তার ধারে ছেড়ে দিয়ে চড়ানোর নামে এলাকার সাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করছে। যে এলাকায় শুকুর চড়ানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়, সে এলাকায় মানুষ দুর্গদ্ধে থাকতে পারে না। নাকে মুখে রুমাল দিয়ে পথ চলতে হয়। অনেক গরুর খামারী বলেছেন যে এলাকা দিয়ে শুকর চড়ান হয় সেই এলাকায় বেশী গরুর খুরা রোগ দেখা দেয়। বর্তমানে একটি শুকুর পালনকারী দল রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কে শুকুর চড়াচ্ছে। ফলে ওই এলাকায় সাধারন মানুষ পেটের পিড়া সহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। বিষেজ্ঞরা বলছেন শূকরের বর্জ্যের দুর্গন্ধও একটি বড় সমস্যা, যা প্রতিবেশী এবং খামারের অন্য পশুদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। শূকরের বর্জ্য মানুষের বর্জ্যের মতো ব্যাকটেরিয়া এবং উচ্চ পরিমাণে অ্যামোনিয়ায় ভরা। ডাঃ খন্দকার মমিনুল ইসলাম বলেন শুকুরের মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, কারণ এতে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও কৃমি থাকে, যা মানবদেহে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এছাড়া, এতে উচ্চমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরল থাকে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। শূকর থেকে উৎপন্ন দুর্গন্ধ এবং দূষণকারী পদার্থের ঘনত্ব মানসিক চাপ, মেজাজের পরিবর্তন এবং রক্তচাপ বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত। ইসলাম ধর্মীয় বিধান অনুসারে হারাম হিসেবে বিবেচিত হয়। পরিবেশবাদীরা বলছেন শুকুরগুলো পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শুকর নানা ধরনের রোগজীবাণুর বাহক, জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও কৃষিক্ষেত্রে নানা ঝুঁকি তৈরিসহ রোগজীবাণু ছড়াতে পারে, পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে।
একজন কৃষিবিদ জানান, খোলা জায়গায় মলত্যাগ করার ফলে জল ও মাটি দূষিত হয়। এরা ফসলের ক্ষতি করে এবং মাটির উর্বরতা নষ্ট করতে পারে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা এআরএম আল মামুন জানান, যে এলাকা দিয়ে শুকুর চড়ে সে এলাকায় খুড়া রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। গরুর একবার ঘুরা রোগ হলে বাঁচানই দায় হয় অনেক সময়। এছারা দুধের গরুর দুধ কমে যায়। আমাদের দেশে এগুলো নিয়ন্ত্রনে তেমন কোন আইনের প্রয়োগ নেই তাই খামারীকেই সচেতন হতে হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত