ভারতের গজল ডোবায় বাঁধ নির্মানের ফলে
কাউনিয়ায় শতশত মৎস্যজীবি ও নৌকার মাঝি বেকার হয়ে পড়েছে
প্রকাশ: ৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:২১ | আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:১৮
কাউনিয়ায় খরস্রোতা তিস্তা নদী পানি শুকিয়ে মরা খালে পরিনত হয়েছে। নদীতে পানি না থাকায় শত শত মৎস্যজীবী ও মাঝি বেকার হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে তিস্তা নদী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নৌকা চালিয়ে কাউনিয়া ও রাজারহাট এবং লালমনিরহাট সদর উপজেলার শত শত মাঝি জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। সেই নদীর উজানে ভারতের গজল ডোবায় বাঁধ নির্মান করায় এক সময়ের খরস্রোতা তিস্তা এখন পানি শুকিয়ে মরাখালে পরিনত হয়েছে। নদীকে ঘিরে সভ্যতার ক্রমবিকাশসহ শত শত মানুষ জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। নদীতে পানি না থাকায় কাউনিয়া থেকে রাজারহাট, কুড়িগ্রাম হয়ে চিলমারী বন্দর পর্যন্ত নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নৌকার মাঝিরা বেকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে।
নিজপাড়া মাঝিপাড়া গ্রামের মৎস্যজীবি শীতল, শুশিলসহ অনেকে জানান, বাব দাদার আমল থেকে তিস্তা নদীসহ বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ মেরে তা বিক্রি করে জীবন চালিয়ে আসছি। কিন্তু বর্তমানে আর এই পেশায় থাকা যাচ্ছে না, তিস্তা নদী আর নদী নাই চর পরে মরা খালে পরিনত হয়েছে। জীবন বাচাঁতে আমাদের এই পেশা অনেকে ছেরে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতা সত্যবাবু জানান, আগে তিস্তা নদীতে হরেক রকমের মাছ পাওয়া যেত, তার মধ্যে বিখ্যাত ছিল বইরাতি মাছ। তিস্তার মাছ অনেক সুস্বাদু হওয়ায় কেনার বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসতো আর আমরা মাছ বিক্রি করে আনন্দের সাথে জীবন চালাতাম। এখন তিস্তা নদীতে পানি নাই আমাদের সেই দিনও আর নাই। মাছের আড়ৎদার ভোলা রাম বর্মন জানান, একটা সময় ছিল তিস্তা নদীর মাছ কেনার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসতো আড়তে। এখন নদীতে পানি নেই, সেই মাছও নেই, ক্রেতায় নেই। নদীতে মাছ না থাকায় ব্যবসা আর আগের মতো চলে না তাই ৪/৫জন কর্মচারীকে বাদ দিয়ে দিয়েছি, আবার অনেক ব্যবসাই বাদ দিয়েছে। নদীটি ড্রেজিং করলে হয়তো কিছু পানি থাকলে কিছু মাছ পাওয়া যেতে পারে।
পাঞ্জর ভাঙ্গা গ্রামের নৌকার মাঝি জব্বার, নুরল, কাদের, জলিল, জাহেদুল এর সাথে কথা বলে জানা গেছে প্রায় চার মাস থেকে নদীর পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তখন থেকে নৌকা না চলায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন জাপন করছে। সরকারী ভাবে তাদের কোন সাহায়্যে সহযোগিতা করা হয় না। অনেকে বাধ্য হয়ে বাব দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। যারা দিন মজুরীর কাজ করতে পারছেনা তারা বেশী অসহায়
হয়ে পড়েছে। নদীতে পানি না থাকায় বোর চাষ ও হুমকির মধ্যে পড়েছে।
কাউনিয়া এলাকার সকল মৎস্যজীবি ও মাঝিমাল্লাসহ সাধারন মানুষ তিস্তা নদীর হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছে।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত