কর্তৃপক্ষের অবহেলায় অক্সিজেনের ফ্যাক্টরী উপরে পড়ারা শঙ্কা

কাউনিয়ায় বায়ু দূষন বারছে

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:১২ |  আপডেট  : ৫ মে ২০২৫, ১৮:১২

গাছ মানুষের বন্ধু। গাছ নানাভাবে আমাদের উপকার করে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, অক্সিজেন, ওষুধ ইত্যাদি আমরা গাছ থেকে পাই। গাছের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। প্রাণী জগতের অস্তিত্ব রক্ষায় গাছের বিকল্প নেই। গাছ আছে বলেই পৃথিবী আজও বসবাসের যোগ্য। সেই উপকারী গাছগুলো যখন মাটির অভাবে উপরে পড়ছে অথবা মরে যাচ্ছে তখন কাউনিয়া উপজেলা প্রশাসন নির্বিকার। প্রশাসনের নাকের ডগায় এ দৃশ্য বর্তমান হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেই। 

সরেজমিনে উপজেলা পরিষদের পুকুর পাড়সহ সরকারি বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখাগেছে বেশ কিছু গাছ পরিচর্যার অভাবে মরেছে ও মরার উপক্রম হয়েছে এবং বেশ কিছু গাছের গোড়ার মাটি সরে গিয়ে যে কোন সময় উপড়ে পরার উপক্রম হয়েছে। পরিষদের পুকুর পাড়ের শোভা বর্ধনকারী ও অক্সিজেনের ফ্যাক্টরী বেশ কিছু গাছ এর আগেই মরে গেছে, আর বাকি যা আছে মাটি সরে গিয়ে এবার ঝড়েই উপরে পড়বে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে বায়ু দূষনের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধিরসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ সামাজিক বনায়ন ও বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ থাকলেও পরিকল্পিত ভাবে সরকারী রাস্তা ও জায়গায় গাছ রোপন করা হয়নি। পরিচর্যার জন্য নেই পরিকল্পনা ও সমন্বয়। পরিবেশবিদের মতে পরিচর্যার অভাব ও দূষণে মারা যাচ্ছে সড়কের গাছ। সম্প্রতি রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে দেখাগেছে বেশ কিছু গাছ মরে যাচ্ছে। একই দৃশ্য দেখা গেছে অন্যান্য সড়কেও। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গাছের চারা রোপণ করে দায়িত্ব শেষ করে সামাজিক বনায়ন ও বন বিভাগ। কোথায় কী ধরনের গাছ লাগাতে হবে, তার সঠিক পরিকল্পনা নেই। আর কে মহাসড়কসহ বিভিন্ন সরকারি রাস্তায় বেশীরভাগই বিদেশি প্রজাতির। এসব বিদেশি গাছ লাগানোর একটি বড় অংশ ইউক্লিপটাস যা অধিক পরিমান ভূগর্ভস্ত পানি শোষন করে। এই গাছে পাখি বসে না, গাছের পাতা পানিতে পড়লে পানি দুষিত হয়ে মাছ মরে যায়। দূষণ যত বাড়ছে, সবুজ গাছপালা তত কমছে। দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি বিপদে আছে রাস্তার গাছপালা। চলার পথে মনে হতে পারে গাছগুলো মরে যাচ্ছে। রাস্তার ধুলা উড়ে এসে জমতে জমতে সবুজ পাতাগুলোকে করে তুলেছে বিবর্ণ। ফলে গাছের খাদ্য ও অক্সিজেন তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। পত্ররন্ধ্র ও সূর্যের আলোর মাঝখানে ধূলিকণার আস্তর প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করছে। ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিতেও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে গাছ। গাছের প্রতি এমন আচরণকে নিষ্ঠুরতা বলছেন পরিবেশবিদরা। গাছ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গাছ ভূমিক্ষয় রোধ করে এবং এদের পত্রপল্লবের নিচে আবহাওয়া-সুরক্ষিত বাস্তুসংস্থান তৈরি করে। গাছ বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড দূরীকরণ, বাতাসে অক্সিজেন যোগান দেওয়া এবং ভূমি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দিনের পর দিন গাছ কেটে পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে। গৃহস্থবাড়ি নির্মাণ, কর্পোরেট ভবন তৈরি, রাস্তা নির্মাণ, গাছের পাতা ছিড়ে, ডাল-পালা ভেঙে, পেরেক মেরে গাছের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। পেরেক কারণে গাছের ছিদ্র দিয়ে ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব প্রবেশ করে গাছে দ্রুত পচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক জানান বিষয়টি তিনি সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত